চট্টগ্রাম: ওমর ফারুক। একসময় ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
তাদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। পরে বিষয়টি উপজেলা ছাত্রলীগের দৃষ্টিগোচর হলে তার রিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বহিষ্কার করা হয় সংগঠন থেকে।
একইভাবে সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ হেফাজত নেতা মামুনুল হকের পক্ষে স্ট্যাস্টাস দিয়ে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার হন।
শুধু ফারুক কিংবা আজিজই নন, এভাবে শিবির-ছাত্রদল থেকে ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ করেছে আরো অনেকে।
ছাত্র শিবিরের রাজনীতি করলেও পরে ক্ষমতার পালা বদলে নিজেকে প্রগতিশীল সাজিয়ে গিয়াস উদ্দিন যোগ দেন ছাত্রলীগে। লুফে নেন সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতির পদ। তিনিও দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেন। পরে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসাইন চৌধুরী তপু বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দেশের সর্ববৃহৎ সংগঠন। এখানে এলে অনেকেই পদ-পদবি পেয়ে থাকেন। যারা আগে ছাত্রলীগ করতো না, বিভিন্ন মাধ্যমে তারা অনুপ্রবেশ করে পদ নিয়ে নিচ্ছে। তারপরও আমাদের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। যদি কেউ সংগঠনবিরোধী মনোভাব পোষণ করে, আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের অভিযোগ, টাকার বিনিময় আর স্বজনপ্রীতি করে কমিটি গঠন করার কারণে ত্যাগী ও মাঠের কর্মীদের বরাবরই অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। সেখানে স্থান পাচ্ছে জামায়াত-শিবির থেকে আসা নেতা-কর্মীরা। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পাচ্ছে তারা।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম বোরহান উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা অনেক সচেতনতা অবলম্বন করে কমিটি অনুমোদন দেই। কিন্তু বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুরোধ থাকে। সেগুলো রাখতে গিয়েই অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকে যায়। তবে আমরা এখন অনেক সতর্ক অবস্থানে আছি।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীরা ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। তারা ধর্মীয়ভাবে অনেক সচেতন। যদি কেউ সংগঠনবিরোধী কোনো মনোভাব পোষণ করে তাহলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, জেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোর ব্যাপারে সেখানকার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের থেকে আমরা খোঁজ নেই। তারপরও কিছু লোক ঘাপটি মেরে থাকে, বুঝার কোনো উপায় থাকে না। দলীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু সামনে এলে অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করা সহজ হয়। ইতোমধ্যে আমরা অনেকজনকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিয়েছি। আরো তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিবো।
তিনি আরও বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। সামনে যে নতুন কমিটিগুলো হবে সেগুলোতে আমরা পরিবার, সামাজিক অবস্থানসহ সবকিছু দেখবো।
বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২১
এসি/টিসি