ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চসিক নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মাহমুদুল ইসলাম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
চসিক নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মাহমুদুল ইসলাম ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম: গণতান্ত্রিক সরকারের আবরণে স্থানীয় সরকারের টুঁটি চেপে দেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রথম মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, এ মুহূর্তে যদি সিটি করপোরেশন কর্তৃক জনদুর্ভোগ লাঘবে কর্তৃত্ব না থাকে, তাহলে এত ব্যয়বহুল এবং জটিল এ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা কি আছে?

কলকাতা শহরের মেয়র নির্বাচিত কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকে। লর্ড মেয়র অব লন্ডন ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স অনুযায়ী ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর উপরে অবস্থান।

নিউইয়র্ক শহরের মেয়র নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনারসহ সব গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেন, তিনি প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত মেয়র।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরে আগে ২৩টি ওয়ার্ড ছিল। আমার হাত ধরে ৪১ ওয়ার্ডের নির্বাচিত কমিশনারদের ক্ষমতা প্রদান করে করপোরেশন গঠনের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ১৯৮৮ সালে আমি তৃতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এ করপোরেশনের প্রশাসক নিযুক্ত হই। করপোরেশনের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের পথে এগোতে থাকি। ১৯৮৯ সালে করপোরেশনের নির্বাচিত কমিশনারদের সঙ্গে সমন্বয় করে আইন মোতাবেক চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ কার্যকর করার পদক্ষেপ গ্রহণ করি।

করপোরেশন আইন অনুযায়ী আমি নিয়োগ নিয়োগ পাওয়ার পর রাজধানীর বাইরে কোনো ব্যক্তিকে প্রথম প্রতিমন্ত্রীর পদ ও মর্যাদায় আসীন করা হয়। আমার হাতে প্রথম নির্বাচিত করপোরেশন গঠিত হয়। সেখানে তিন প্রকারের কমিশনার বা কাউন্সিলর ছিল- ওয়ার্ড কমিশনার, মহিলা কমিশনার এবং অফিশিয়াল কমিশনার। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, গণস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ছিলেন অফিসিয়াল কমিশনার, যারা করপোরেশনের মাসিক সভায় উপস্থিত থাকতে বাধ্য ছিলেন।

প্রতি সপ্তাহে হরতালের পরও দায়িত্ব পালনকালে চসিকের আয় ১২০০ শতাংশ বাড়িয়ে করপোরেশনকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের শুরুর দিকে ওয়ার্ড কমিশনার ও মহিলা কমিশনারদের উপসচিব পদমর্যাদা প্রদান করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ১৯৯৩ সালের দিকে তৎকালীন জাতীয় সংসদে অফিশিয়াল কমিশনার পদগুলো বিলুপ্ত করে আইন প্রণয়ন করা হয়। মূলত সেই থেকেই মেয়রের আইনগত কর্তৃত্ব নগর সমন্বয় করা তথা নগর সরকার বা সিটি গভর্নমেন্টের বিলুপ্তি সাধন হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় সিটি করপোরেশন আইন সংশোধন হলেও অফিশিয়াল কমিশনার পদ সৃষ্টি হয়নি এবং মেয়রের পদ ‘স্তম্ভে’ পরিণত হয়।

সিটি করপোরেশনকে কার্যকর বা মেয়রের কর্তৃত্ব বাড়াতে সিটি করপোরেশন আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সিটি করপোরেশন আইন সংশোধন করা না গেলে স্থানীয় সরকার কমিশন গঠন অথবা চট্টগ্রাম নগর বা বৃহত্তর চট্টগ্রামের জন্য প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের অধীনে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা যেতে পারে। এ কমিটি সব প্রকল্প প্রণয়ন, যথাসময়ে বাস্তবায়ন, স্বচ্ছতাসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের নৈসর্গিক সৌন্দর্য রক্ষায় কাজ করতে পারবে।  

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট মো. সেলিম ও অ্যাডভোকেট লিটন গুহ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
এআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।