ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘চট্টগ্রামবাসী ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনার ভালোবাসার প্রতিদান দেবে’

তপন চক্রবর্তী, ডেপুটি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২১
‘চট্টগ্রামবাসী ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনার ভালোবাসার প্রতিদান দেবে’ ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া

চট্টগ্রাম: প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চট্টগ্রাম শহর, চট্টগ্রামের মানুষ একটি আবেগের জায়গা। তিনি ব্যক্তিগতভাবে চট্টগ্রামের মানুষকে সম্মান করেন।

তাঁর অনেক ব্যক্তিগত স্মৃতি রয়েছে চট্টগ্রামকে ঘিরে। এ কারণে দু’হাত ভরে শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের মানুষের জন্য অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।
বাংলাদেশের উন্নয়নে যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, সেখানে চট্টগ্রামকে সংযুক্ত করেছেন। চট্টগ্রামবাসী চসিক নির্বাচনে ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনার ভালোবাসার প্রতিদান দেবেন।

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বতন্ত্র কাঠামো দেওয়ার জন্য ফিনেন্সিয়াল অটোনমি থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নসহ সবকিছুই করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশে হারিয়ে যাওয়া ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছি। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই। ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো’ এই শ্লোগানও শেখ হাসিনার দেওয়া।  

তিনি বলেন, আজকে নির্বাচনে অনেকে হেরে গিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা, সংবিধান এবং নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, নির্বাচনে জিতলেই নির্বাচন কমিশন ভালো-গণতন্ত্র ঠিক আছে-ভোট সুষ্ঠু হয়েছে; এ ধরনের কথা বলে বিএনপি। আর নির্বাচনে হেরে গেলে তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়া, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশন ও দেশে আইনের শাসন-সবকিছুকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।

ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২০২৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগেই জাতিকে বলেছিলেন-বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করার জন্য। আমরা এর প্রতিফলন অনেক জায়গায় দেখেছি। যেমন-সিলেটে সর্বশেষ যে সিটি করপোরেশন নির্বাচন হলো, সেখানে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে দুপুরে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে-এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তিনি করেছিলেন। কিন্তু দেখা গেলো, ভোট যখন শেষ হয় তখন সেখানে বিএনপির মেয়র প্রার্থী জয়লাভ করে।

‘সাম্প্রতিক সময়ের যে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানে শতকরা ৬২ ভাগ মানুষ ভোট দিয়েছে। সেখানেও বিএনপির যারা জনপ্রিয় প্রার্থী, তারা পাস করেছে। পৌরসভার মেয়র পদে তারা জয়লাভ করেছে। অবশ্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে’।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের নির্বাচন যদি দেখেন-বিএনপি এই মুহূর্তে সম্পূর্ণভাবে একটি দেউলিয়া সংগঠন হয়ে গেছে। বিএনপি তাদের দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যক্তিগত দুর্নীতির দায় সাংগঠনিকভাবে, দলীয়ভাবে মোকাবেলা করছে। সেখানে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার কোনও প্রতিফলন নাই। তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজা ভোগ করছেন। যাকে তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন-সেই তারেক রহমানও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। এখন তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে আছেন বিদেশে। বিএনপির গঠনতন্ত্রে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সংগঠন থেকে বহিষ্কারের বিধান ছিল। তারা কোনও প্রকার কাউন্সিল বা দলীয় নেতাদের মতামত ছাড়াই গঠনতন্ত্রের সেই বিধানটি বিলুপ্ত করেছে। তার মানে, বিএনপি সাংগঠনিকভাবে দুর্নীতিকে বৈধতা দিয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি জাতির কল্যাণে তাদের কোনও রূপরেখা জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ এসব কারণে বিএনপির প্রতি মানুষের কোনও আস্থা নেই। বিএনপির মধ্যে যারা ভালো কর্মী ছিলেন তারাও নৈতিকভাবে খুব হতাশ হয়ে পড়েছেন শীর্ষ নেতাদের এই ধরনের কর্মকাণ্ড দেখে।

ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বিএনপির কোনও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নেই, নির্বাচন এলে তারা নির্বাচনে যায়, প্রতি মুহূর্তে তারা নির্বাচন বয়কটের হুমকি দেয়। চসিক নির্বাচনে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ইতিমধ্যে কয়েকবার বলেছেন-আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। বিএনপির সমর্থক যারা, তারাই দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকে-তাদের প্রার্থী শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে কি না। বিএনপির এ ধরনের আচরণ নতুন কিছু নয়। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগও নতুন কিছু নয়। আমরা মনে করি, সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন যেভাবে হয়েছে সেভাবে চসিক নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে। এখানে ইভিএমে নির্বাচন হচ্ছে। ইভিএমে নির্বাচনে স্বচ্ছতা বেশি পেপার ব্যালটের চেয়ে। এখানে ভোটারকে নিজে এসে তার আঙুলের ছাপ দিয়ে কম্পিউটারে শনাক্ত করার পর ভোট দিতে হয়।

এই নির্বাচনের সঙ্গে সরকার পরিবর্তনের কোনও সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনও মেয়র পদপ্রার্থী জয়লাভ করলে দেশের সরকার ব্যবস্থায় কোনও পরিবর্তন আনবে না। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গেলেও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। তবে এটা ঠিক, চট্টগ্রামে যত উন্নয়ন হয়েছে এবং চট্টগ্রামের আশপাশে যতগুলো বড় স্থাপনা আছে-সবকিছু আওয়ামী লীগ সরকার করেছে। চট্টগ্রামের স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম বন্দর সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করা, ৬ লেইনের রাস্তা, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে, ফ্লাইওভার হচ্ছে, কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল হচ্ছে। চট্টগ্রামে যে ইকোনমিক জোন হচ্ছে মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও আনোয়ারায়-চট্টগ্রামের মানুষের ভাগ্য বদলে দেওয়ার, চট্টগ্রামের মানুষের কল্যাণের জন্য যতগুলো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে-সব শেখ হাসিনার কল্যাণেই। চসিক নির্বাচনে সেই আওয়ামী লীগের একজন প্রতিনিধি যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়, তাহলে এখানে উন্নয়নের যেসব মহাপরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে-সেগুলো বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।  

ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন-চট্টগ্রামের উন্নয়ন ছাড়া দেশের সার্বিক উন্নযন সম্ভব নয়। আমাদের সরকার বিশ্বাস করে, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড। কারণ দেশের আমদানি-রফতানির শতকরা ৮০ ভাগ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই হয়। এখন সরকারকে, শেখ হাসিনাকে প্রতিদান দেওয়ার সময় এসেছে চট্টগ্রামবাসীর। আমরা যদি নৌকা মার্কার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে পারি, বঙ্গবন্ধুকন্যা এতদিন চট্টগ্রামের মানুষের জন্য যা করেছেন, তার প্রতিদান কিছুটা হলেও আমরা ভোটের মাধ্যমে দিতে পারি। তবে সজাগ থাকতে হবে, বিএনপির মিথ্যাচার ও গুজবের ব্যাপারে। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। আশা করি, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এবং আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২১
টিসি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।