ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনার ধাক্কা: ভরা মৌসুমে বই বিক্রেতাদের মুখ মলিন

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২১
করোনার ধাক্কা: ভরা মৌসুমে বই বিক্রেতাদের মুখ মলিন ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: বছরের শুরুতে স্কুলে স্কুলে চলে ভর্তি কার্যক্রম। নতুন বছরে নতুন শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নতুন বই কিনতে শিক্ষার্থী আর অভিভাবকেরা ভিড় করেন বইয়ের দোকানে।

দোকানভর্তি ক্রেতা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় বই বিক্রেতাদের। রাত-দিন চলে বই কেনাবেচার ধুম।

চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বইয়ের বাজার নগরের আন্দরকিল্লায় জানুয়ারি মাসের চিরচেনা এই দৃশ্য এবার পাল্টে গেছে। নতুন বই নিয়ে বই বিক্রেতারা ক্রেতার আশায় দোকানে বসে থাকলেও দেখা মিলছে না ক্রেতার। তাই বছরের শুরুতেই মুখ মলিন বই বিক্রেতাদের।

মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১৭ মার্চ থেকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। কয়েক দফা বাড়িয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে।  

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্কুল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার পরিবর্তে অটোপাস দিয়ে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা, সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘসূত্রতাসহ নানা কারণে এবার বই বিক্রি কমেছে বলে জানিয়েছেন আন্দরকিল্লার বই ব্যবসায়ীরা।

বুধবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে আন্দরকিল্লার কয়েকটি বই মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ফাঁকা বইয়ের দোকানে বিক্রেতারা ক্রেতার আশায় বসে আছেন। বই কেনাবেচা তেমন নেই। ব্ই বিক্রির ভরা এ মৌসুমে অলস সময় পার করছেন এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।  

তবে পাইকারি দোকানগুলোতে ক্রেতা দেখা না গেলেও কয়েকটি খুচরা দোকানে এক-দুইজন ক্রেতার দেখা পাওয়া গেছে।  

আদনান লাইব্রেরির মালিক শফিক রহমান বাংলানিউজকে বলেন, করোনার কারণে এবার বই বিক্রি করে লাভের আশা দূরে, দোকানের খরচই উঠছে না। প্রতিবছর এই সময়ে যেখানে দিনে ৩০-৪০ হাজার টাকা বিক্রি করতাম, সেখানে এখন ২-৩ হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে না।

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস) চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজী সাবের আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, করোনা এইবার বই ব্যবসায়ীদের পথে বসিয়েছে।  

তিনি বলেন, প্রতিবছর এই সময়ে আন্দরকিল্লায় কয়েকশ’ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। কিন্তু এ বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কোনো ব্যবসা হচ্ছে না। বিক্রেতারা অলস সময় কাটাচ্ছেন।

এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, বইয়ের বাজারের এই দূরবস্থা দেখে আমরা এবার আগের চেয়ে ৭৫ শতাংশ বই কম ছাপিয়েছি। অনেকে বই ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে অন্য ব্যবসায় চলে যাচ্ছেন। আগে যেখানে আন্দরকিল্লায় ২০০ বইয়ের দোকান ছিলো- সেখানে এখন আছে ১১৫টি।

‘করোনার কারণে পোশাকশিল্প থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা প্রণোদনা পেলেও বই ব্যবসায়ীরা কোনো প্রণোদনা পাননি। এই অবস্থা থেকে বই ব্যবসাকে রক্ষায় সরকার উদ্যোগ না নিলে আমরা পথে বসবো। শিক্ষার প্রধান উপকরণ বইয়ের সংকট তৈরি হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, ৭ জানুয়ারি, ২০২১
এমআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।