ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রামুতে প্রফেসর মোশতাকের জানাজায় ঢল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২০
রামুতে প্রফেসর মোশতাকের জানাজায় ঢল অধ্যক্ষ মোশতাক আহমদের জানাজায় মানুষের ঢল। 

কক্সবাজার: কক্সবাজারের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, রামু কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মোশতাক আহমদের জানাজায় মানুষের ঢল নেমেছে।  

বুধবার (২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে চারটায় রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

 পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানাযাপূর্ব সমাবেশে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের পক্ষে শোকবার্তা পাঠ করেন রামু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন।

এ ছাড়াও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল, উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জাফর আলম চৌধুরী, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম, রামু সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল হক, কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মরহুমের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমদ, ছেলে শামীম আহসান ভুলু বক্তব্য দেন। জানাজায় ইমামতি করেন মাওলানা আমান উল্লাহ।  

প্রফেসর মোশতাক আহমদ  মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তিনি দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।  মৃত্যুকালে
তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে, ৫ মেয়ে, অসংখ্য শিক্ষার্থী ও গুণগ্রাহী রেখে যান।

বিভিন্ন মহলের শোক

বরেণ্য এ শিক্ষাবিদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রনয় চাকমা, রামুর প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন প্রজন্ম'৯৫ এর সভাপতি বদিউল আলম পাভেল, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আমিন মোরশেদসহ সদস্যরা।  

শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে ইউনিটি ৯৪, রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রামু ল্যারেটরি স্কুল, বাঁকখালী উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।  

মোশতাক আহমদের বর্ণাঢ্য জীবন

প্রফেসর মোশতাক আহমদ ১৯৪০ সালের ৮ জানুয়ারি রামু উপজেলার মন্ডলপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা রশিদ আহমদ সমবায় কর্মকর্তা এবং মা মুনিরা বেগম গৃহিণী ছিলেন। তিনি ১৯৫৫ সালে রামু খিজারী হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৭ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬১ সালে বিএ অনার্স, ১৯৬৩ সালে ভাষা ও সাহিত্যে এমএ পাস করেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম কমিটির নেতৃত্ব দেন। কক্সবাজারের পতন হলে পাশের বার্মায় (মায়ানমার) আশ্রয় গ্রহণ করেন। সেখান থেকেও শত্রুসেনাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন। স্বাধীনতার পর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে (ন্যাপ-মোজাফ্ফর) যোগদান করেন এবং ওই সময় কক্সবাজার জেলা সহ সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ন্যাপের প্রার্থী হিসেবে রামু-উখিয়া-টেকনাফ এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

প্রফেসর মোশতাক আহমদ শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে কক্সবাজার জেলা শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ, ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান, ২০০৩ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে কৃতি শিক্ষাবিদ পুরস্কার এবং সাহিত্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন। শিক্ষা ও সাহিত্যে বিরল প্রতিভাধর এ ব্যক্তিত্বের প্রয়াণে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল শূন্যতা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২,২০২০
এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।