ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বসানো জীবাণুনাশক চেম্বার এখন অচল

মিনার মিজান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২০
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বসানো জীবাণুনাশক চেম্বার এখন অচল ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: করোনা পরিস্থিতির প্রথম থেকে জনসাধারণকে জীবাণুমুক্ত রাখতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বসানো হয়েছিল জীবাণুনাশক চেম্বার। কিন্তু মাস দুয়েক পরই এসব চেম্বার অনেকটা অচল হয়ে পড়ে।

প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার সংক্রমণ কমে যাওয়ায় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় চেম্বারগুলো। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন করে এসব চেম্বার পুনরায় চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিন দেখা যায়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়, চট্টগ্রাম ওয়াসাসহ বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে বসানো রয়েছে জীবাণুনাশক চেম্বার। এসব চেম্বারের একটিরও ব্যবহার নেই। শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, বিভিন্ন শপিংমলের সামনেও বসানো জীবাণুনাশক চেম্বার এখন কার্যত অচল। এছাড়া প্রথমদিকে  বিভিন্ন হাসপাতালের প্রবেশপথে জীবাণুনাশক চেম্বার বসানো হলেও পরবর্তীতে সরিয়ে নেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে আসা নুসরাত জাহান নামে এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, সরকার বলছে- নো মাস্ক নো সার্ভিস। অথচ আমার পাশে দাঁড়িয়ে মাস্ক না পড়া এক ব্যক্তি সেবা নিয়ে চলে গেলেন। কেউ বাধা দেয়নি৷ আমাদের দেশে আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ না থাকার কারণে মানুষ নিয়ম ভঙ্গ করছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসায় সেবা নিতে আসা মফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির পর থেকে ওয়াসার মূল ফটকে জীবাণুনাশক চেম্বার বসানো হয়। কিন্তু এর ব্যবহার চোখে পড়েনি কখনও। যেহেতু ওয়াসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, গ্রাহকদের জন্য হলেও স্বাস্থ্যকর একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা জরুরি।  

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্থাপন করা জীবাণুনাশক চেম্বারটি সচল আছে কিনা জানতে চাইলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এজেডএম শরীফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সরকার অফিস-আদালত সব খুলে দেওয়ার পর আমরা জীবাণুনাশক টানেলের চেয়ে মাস্কের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

তিনি বলেন, প্রতিদিন জেলা প্রশাসনে এতো বেশি মানুষ আসেন, তাদের সবাইকে জীবাণুনাশক টানেলের ভিতর দিয়ে আনা কষ্টকর। তাই টানেলের চেয়ে মাস্কের ওপর জোর দিচ্ছি। নো মাস্ক, নো সার্ভিস নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।  

জীবাণুনাশক চেম্বার সচল রাখার বিষয়ে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে জীবাণুনাশক চেম্বার এবং হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু ডিজইনফেকশন করতে যে উপাদানটি আমরা ব্যবহার করি তার স্বল্পতার কারণে আপাতত চেম্বারটি বন্ধ রাখা হয়েছে। যেহেতু করোনা সংক্রমণ আবার বাড়ছে তাই এই চেম্বার চালু করা হচ্ছে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষও জীবাণুনাশক চেম্বারটি চালুর বিষয়ে উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন হাসপাতালে থাকা জীবাণুনাশক চেম্বার সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) এর মেডিসিন বিভাগের প্রধান এবং করোনা ওয়ার্ডের ফোকাল পারসন ডা. মামুনুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, এসব জীবাণুনাশক চেম্বার ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম নয়। নিজের হাত মুখ পরিস্কার রাখলেই এবং মাস্ক পড়ার বিধি মেনে চললেই এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ডা. মামুনের সঙ্গে একমত পোষণ করে জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট আবদুর রব মাসুম বাংলানিউজকে বলেন, জীবাণুনাশক চেম্বার দিয়ে আদৌ জীবাণু দূর হয় কিনা তা জানা নেই। তবে সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই মাস্ক পরা জরুরি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘন্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২০
এমএম/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।