ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জয়া’র ৩ শাবকের ১টিই বেঁচে আছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২০
জয়া’র ৩ শাবকের ১টিই বেঁচে আছে বাঘ শাবকের পরিচর্যা করছেন ডা. মো. শাহাদাত হোসেন শুভ। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার বাঘিনী জয়া তিনটি শাবকের জন্ম দিলেও বেঁচে আছে একটি।

চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. শাহাদাত হোসেন শুভ বাংলানিউজকে জানান, গত ১৪ নভেম্বর রাতে জয়া-রাজ এর তিনটি শাবকের জন্ম হয়।

কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে মা বাঘ তার শাবকদের দুধ খেতে দেয়নি এবং বাচ্চাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করে। ফলে গত ১৫ নভেম্বর রাতে একটি শাবক মারা যায়।
 

‘বাধ্য হয়ে আমরা বাকি দুটো বাচ্চা আলাদা করি। না খাওয়ার কারণে দুটি শাবকই দুর্বল ও সংকটাপন্ন ছিল। পরবর্তীতে গত ১৮ নভেম্বর আরো একটি বাচ্চা মারা যায়। ’

তিনি জানান, বর্তমানে অপর বাঘের বাচ্চাকে হাতে খাওয়ানো হচ্ছে। তার অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও এখনও সংকটমুক্ত বলার সময় আসেনি। নিয়মিত খাবার গ্রহণ করলে মাসখানেক পরে বাঘটিকে নিরাপদ বলা যাবে মর্মে আশা করা যায়।  

বাচ্চাটির নিরাপত্তা ও সংক্রমণের আশংকার প্রেক্ষিতে এটিকে জনসাধারণ সহ সবার কাছ থেকে দূরে রাখা হয়েছে। এছাড়া যারা বাচ্চার যত্নের সঙ্গে সরাসরি জড়িত তাদের ব্যতীত অন্য কাউকে বাচ্চাটির কাছে যেতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।  

চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ২০০৩ সালে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে দুটি বাঘ আনা হয়েছিল। ২০০৬ সালে বাঘ ‘চন্দ্র’ মারা যায়। ২০০৯ সালে তার সঙ্গী ‘পূর্ণিমার’ ক্যান্সার ধরা পড়ে। ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর পূর্ণিমা মারা যায়। এরপর চার বছর বাঘশূন্য অবস্থায় ছিল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা।

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুটি বাঘ কেনার জন্য ২০১৬ বছরের ১৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। চারটি প্রতিষ্ঠান বাঘ আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করে দরপত্রে অংশ নেয়। সর্বনিম্ন ৩৩ লাখ টাকায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর বন্যপ্রাণী আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ফেলকন ট্রেডার্সকে কার্যাদেশ দেয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। বাঘ কেনার পুরো টাকা চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার টিকেট বিক্রি বাবদ আয়ের তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছে।

ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর আমদানি করা বাঘের মধ্যে ১১ মাস বয়সী ‘রাজ’ ও ৯ মাস বয়সী ‘পরী’ ঘরে তিনটি শাবকের জন্ম হয় ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই। এর মধ্যে দুইটি ছিল সাদা বাঘ। বাকিটি কমলা-কালো ডোরাকাটা। পরদিন একটি সাদা বাঘ শাবক মারা যায়। একমাত্র সাদা বাঘটির নাম দেওয়া হয় ‘শুভ্রা’। কমলা-কালো শাবকটির নামকরণ করা হয় ‘জয়া’।  
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর পরীর ঘরে আরও দুইটি শাবকের জন্ম হয়। পরদিন একটি মারা যায়। বাকিটির নামকরণ করা হয় ‘করোনা’।    

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বর্তমানে অর্ধশতাধিক প্রজাতির তিন শতাধিক প্রাণী ও পাখি আছে। প্রাণীর মধ্যে আছে সিংহ, জেব্রা, ভাল্লুক, কুমির, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, উল্টোলেজী বানর, উল্লুক, হনুমান, চিতা বিড়াল, গয়াল ইত্যাদি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২০
এআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।