ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

লোকবল ঘাটতি নিয়ে চলছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের যান্ত্রিক বিভাগ

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
লোকবল ঘাটতি নিয়ে চলছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের যান্ত্রিক বিভাগ প্রতীকী ছবি।

চট্টগ্রাম: হঠাৎ ইঞ্জিন বিকল। এ কারণে একদিন চলেনি একটি ট্রেন।

এতেই ক্ষতি হয় প্রায় ১০ লাখ টাকা। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের যান্ত্রিক বিভাগ এসব ইঞ্জিন মেরামত করে এ ক্ষতি পুষিয়ে দেয়।

শুধু ট্রেনের ইঞ্জিন নয়, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সব ক্যারেজ ও ওয়াগন রক্ষণাবেক্ষণ করে যান্ত্রিক বিভাগ। বিভাগটি সচল রাখতে গিয়ে এখানকার কর্মীরা দুইজনের কাজ একজন করছেন। কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সবাইকে ৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ১০-১২ ঘণ্টা অর্থাৎ ৪ ঘণ্টা অতিরিক্ত কাজ করতে হচ্ছে।  

যান্ত্রিক বিভাগ সূত্র জানায়, পাঁচ হাজার ১৯৩টি মঞ্জুরিকৃত পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন তিন হাজার একজন। লোকবল সংকট রয়েছে দুই হাজার ১৯২টি। চলতি বছরে ৯৫ জন অবসরে গেলে সবমিলিয়ে ৫২ শতাংশ লোকবল সংকটে ভুগবে যান্ত্রিক বিভাগ।

এই বিভাগে ৬টি নির্বাহী ইউনিট রয়েছে। ইউনিটগুলো হলো-সদর দফতর, ডিএস/ডব্লিউ/পাহাড়তলী, ডিএমই/লোকো/ঢাকা ও চট্টগ্রাম, ডিএমই/ ক্যারেজ, ওয়াগন/ঢাকা ও এএমই/আইসি/চট্টগ্রাম।

এরমধ্যে প্রথম শ্রেণির ২৩টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১৮ জন, ঘাটতি ৫ জন। দ্বিতীয় শ্রেণির ২৩০টি পদের বিপরীতে কর্মরত ৯১ জন, ঘাটতি ১৩৯ জন। তৃতীয় শ্রেণির দুই হাজার ৩১৩টি পদের বিপরীতে কর্মরত এক হাজার ২৫৯ জন, ঘাটতি ১০৫৪ জন। ৪র্থ শ্রেণির এক হাজার ২৭৩টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৮৮৫ জন, ঘাটতি ৩৮৮ জন।

পাহাড়তলীতে অবস্থিত রেলওয়ের কেপিআইভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ মেরামত কারখানা। এই কারখানার কাজ পূর্বাঞ্চলের সব ট্রেনের ইঞ্জিন মেরামত করা। কোনো ইঞ্জিন বিকল বা অন্য কোনো সমস্যার কারণে ইঞ্জিন কাজ না করলে এ কারখানায় সংস্কার করা হয়।  

কারখানাটিতে ৩১৩ জনের মঞ্জুরিকৃত পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১৫৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। লোকবল সংকট রয়েছে ১৫৬ জন। এরপরও কাজ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। লোকবল চাহিদা পূরণ হলে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ কাজ হতো বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

কারখানার কর্মব্যবস্থাপক রাজীব কুমার দেবনাথ বাংলানিউজকে জানান, করোনার মধ্যেও কারখানার কর্মীরা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেছে। এসময়ে ৩৬টি শিডিউল লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ও ২৫৬টি স্পেশাল ইঞ্জিন মেরামত করে সরকারের আড়াই কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে কারখানার কর্মীরা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী ফকির মো. মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, যান্ত্রিক বিভাগে কর্মী সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। তবে এরপরও আমরা কর্মীদের অতিরিক্ত কাজ করাচ্ছি। ৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ১০-১২ ঘণ্টা কাজ করে কর্মীরা বিভাগের কার্যক্রম স্বাভাবিক রেখেছে। কর্মী সংকট কাটলে এখনকার চেয়ে দ্বিগুণ কাজ করা যেতো।

তিনি বলেন, বেশ কয়েকবছর রেলওয়েতে নিয়োগ বন্ধ ছিলো। এজন্য কর্মী সংকট দেখা দিয়েছে। তবে সম্প্রতি নিয়োগের জন্য রেল মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। আমরা চাহিদা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। শিগগিরই কর্মী সংকটের চাহিদা পূরণ হবে। তখন রেলওয়ের আয়ও বাড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
জেইউ/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।