ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনার মধ্যেও আড়াই কোটি টাকা সাশ্রয় পাহাড়তলী কারখানায় 

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২০
করোনার মধ্যেও আড়াই কোটি টাকা সাশ্রয় পাহাড়তলী কারখানায়  ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম: করোনার সময়েও ৩৬টি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) মেরামত করা হয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী কারখানায়। এতে সরকারের সাশ্রয় হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা।

শুধু তাই নয়, এ সময়ে বিশেষ মেরামতে আসা ২৫২টি ইঞ্জিনও সংস্কার করা হয়েছে এই কারখানায়।

পাহাড়তলীতে অবস্থিত রেলওয়ের কেপিআইভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ মেরামত কারখানা।

এই কারখানায় ২৮৮ জন মঞ্জুরিকৃত পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১৪৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। করোনা মহামারীর সময়ে এই ১৪৭ জন আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ কাজ করেছেন।

কারখানার কর্মব্যবস্থাপক রাজীব কুমার দেবনাথ বাংলানিউজকে জানান, লোকবল সংকটের পরেও দক্ষ জনবলের কারণে ৩৬টি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) মেরামত করে সরকারের আড়াই কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী কারখানা।  

তিনি বলেন, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের দিক নির্দেশনার ১০টি নতুন ইঞ্জিন রেলের বহরে যুক্ত হয়। যেগুলোর কমিশনিং কার্যক্রম চলমান। এছাড়া রেলওয়ের ডিজি, এডিজি আরএস, সিএমই’র (লোকো) নির্দেশনায় ইঞ্জিনগুলোর টেস্টিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।  

রাজীব কুমার দেবনাথ বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে নতুন ইঞ্জিনগুলো রেলের বহরে যুক্ত হবে। নতুন ইঞ্জিন অত্যাধুনিক হওয়ায় রানিং টাইম কম হবে এবং আগের চেয়েও কম সময়ে যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছবে।  

‘অনেক পুরোনো যন্ত্রাংশের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও দক্ষ জনবল এবং বিসিক অনুমোদিত স্থানীয় সংস্থা থেকে অনেক কম দামে মালামাল সংগ্রহ করে ইঞ্জিনগুলো সচল রাখা হচ্ছে। এতে সরকারের অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে।  ’

তিনি উদাহরণ দিয়ে একটি যন্ত্রাংশ কুলিং ফ্যানের কথা বলেন।  যেখানে ম্যানুফেকচারিং সংস্থা ইএমডির পরামর্শ মোতাবেক প্রতি চার বছর পর পর নতুন কুলিং ফ্যান ক্রয় করে ওই যন্ত্রটি প্রতিস্থাপন করার পরামর্শ রয়েছে।  

সে হিসেবে বর্তমানে ৭৬টি ইঞ্জিনে প্রতি চার বছরে যন্ত্রাংশ বাবদ ১৯ থেকে ১০ কোটি টাকা খরচ হওয়ার কথা। কিন্তু বছরে মাত্র ৪-৫ লাখ টাকা খরচ করে ইঞ্জিনগুলো সচল রাখায় সরকারের বিপুল পরিমাণে রাজস্ব সাশ্রয় হচ্ছে।

এছাড়াও লোকোমোটিভ একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ ট্রাকশন মটর। যার প্রত্যেকটির মূল্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা। বছরে প্রায় ২০০ ট্রাকশন মটর প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। এসব ট্রাকশন মটরও মেরামত করে সচল রাখা হচ্ছে।

যন্ত্রাংশ ব্যয় বেশি হওয়ায় প্রতিস্থাপনের পরিবর্তে ওই ডিজেল শপে মেরামতের মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। শুধু তাই নয়, একটি ইঞ্জিনের ২৩ হাজারের অধিক যন্ত্রাংশের মধ্যে অধিকাংশই পাহাড়তলী কারখানায় মেরামত করার ফলে রেলওয়েতে অনেক টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।

ইতোমধ্যে দুর্ঘটনায় কবলিত ২১-৯২৩ ও ২২-৯৩৮ নম্বর দুটি ইঞ্জিন ডিজেল শপ পাহাড়তলী কারখানায় মেরামত করা হয়।  

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) মো. মঞ্জুর উল আলম চৌধুরীর বলেন, আমাদের লোকবল সংকটের মধ্যেও পাহাড়তলী ডিজেল কারখানায় অনেক ক্ষতিগ্রস্থ ও অচল ইঞ্জিন সচল করার প্রেক্ষিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সংকট মোকাবেলায় গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২০
জেইউ/এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।