ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বেপারীরা খবর নিচ্ছেন জাহাজের, টিসিবির ট্রাকে দেশি পেঁয়াজ 

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০
বেপারীরা খবর নিচ্ছেন জাহাজের, টিসিবির ট্রাকে দেশি পেঁয়াজ  ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম: ভারত থেকে রফতানি বন্ধের আগে আমদানি করা পেঁয়াজের মজুদ ফুরিয়ে আসছে আড়তে। বেপারী, আড়তদার সবাই এখন সীমান্তের স্থলবন্দরের পরিবর্তে খবর নিচ্ছেন জাহাজের।

 

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মিয়ানমার, পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে ইতিমধ্যে পৌঁছেছে পেঁয়াজের চালান। শিগগির বাজার সয়লাব হয়ে যাবে ১২ দেশের পেঁয়াজে।

 

বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) ট্রাকগুলোতেও এখন মিলবে দেশি পেঁয়াজ। ৩০ টাকায় জনপ্রতি ১ কেজি।

খাতুনগঞ্জের মোহাম্মদীয়া বাণিজ্যালয়ের মালিক হাজি মিন্টু সওদাগর বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসা মিয়ানমারের পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জে ঢুকেছে। শুনেছি প্রথম দফার চালানে আমদানি খরচ কম পড়েছে। মান ভালো হওয়ায় ৭০ টাকা বিক্রি হয়েছে পাইকারিতে। বন্দর থেকে কিছু পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন স্থানেও গেছে। মিশর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের পেঁয়াজ যখন আসতে শুরু করবে বাজারে সরবরাহ বাড়বে, দামও কমবে। পচনশীল পণ্য হওয়ায় এসব পেঁয়াজ বেশিদিন রাখা বা মজুদ করা যাবে না।  

তিনি বলেন, আমাদের পরিচিত উত্তরবঙ্গের অনেক চাষির কাছে এখনো অনেক দেশি পেঁয়াজ আছে। সেদিন একজন জানালেন, প্রতিমণ দেশি পেঁয়াজ ৩ হাজার টাকা দর উঠেছে। আমি বুদ্ধি দিলাম ২০০ মণ বেচে দেন। ভারতের বিকল্প দেশগুলো থেকে পুরোদমে পেঁয়াজ আসা শুরু হলে ভোক্তারা বেশি দামের দেশি পেঁয়াজ কিনবে কেন! একসময় আড়তদার, বেপারীরা ভারতের সীমান্তবর্তী স্থলবন্দরগুলোর দিকে চেয়ে থাকতো, এখন সবাই জাহাজের খবর নিচ্ছেন। কার পেঁয়াজ কবে আসবে চট্টগ্রাম বন্দরে।

খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্যের বড় আমদানিকারক বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এলসির বিপরীতে মিশরে পেঁয়াজের কনটেইনার জাহাজে লোড হয়েছে। আসতে যে ক’দিন সময় লাগে। পাইপলাইনে আরও আছে। প্রাথমিকভাবে হল্যান্ড ও মিশর থেকে ৫ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করবো আমরা।  

তিনি বলেন, অতীতের সংকটের সময়ও আমরা পেঁয়াজ আমদানি করে বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করেছি। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি, রেফার (শীততাপ নিয়ন্ত্রিত) কার্গো জাহাজের চেয়ে আমাদের জন্য রেফার কনটেইনারে পেঁয়াজ আনাই ভালো। কারণ একসঙ্গে এক জাহাজ পেঁয়াজ জোগাড় করা যেমন কঠিন তেমনি একসঙ্গে এক জাহাজ পেঁয়াজ খালাস, পরিবহন, বিপণনও কঠিন।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বুলবুল বাংলানিউজকে জানান, সোমবার ও মঙ্গলবার মিলে মিয়ানমার ও পাকিস্তান থেকে আসা ১৭০ টন পেঁয়াজের ছাড়পত্র ইস্যু করেছি আমরা। এ কেন্দ্র থেকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৫৪ টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য ৩২২টি অনুমতিপত্র (আইপি) নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চীন, মিশর, তুরস্ক, মায়ানমার, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়া, সাউথ আফ্রিকা, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ভারত (২০০ টন) ও পাকিস্তান- এ ১২ দেশ থেকে এসব পেঁয়াজ আনবেন তারা।

সূত্র জানায়, এস আলম গ্রুপসহ অনেক বড় শিল্পগ্রুপও সংকট নিরসনে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছেন। নেদারল্যান্ড, তুরস্ক, মিশরসহ কয়েকটি দেশ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির লক্ষ্যে এস আলম গ্রুপ এলসি খুলেছে। ১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির লক্ষ্য এ শিল্পগ্রুপের। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ছোট-বড় আমদানিকারক মিলে ৬ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ আনবে সমুদ্রপথে।  

টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান জামাল উদ্দিন আহমদ বাংলানিউজকে জানান, ভারতের পেঁয়াজ না থাকায় এখন থেকে টিসিবির ট্রাকে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হবে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩০ টাকা। একজন ভোক্তাকে ১ কেজি পেঁয়াজ দেওয়া হবে।  

তিনি জানান, নগরের বিভিন্ন স্পটে ২০টি ট্রাকে পেঁয়াজ, চিনি, সয়াবিন তেল, মশুর ডাল বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ট্রাকে ২০০ কেজি পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে। সোম ও মঙ্গলবার (২৮-২৯ সেপ্টেম্বর) ৩০০ কেজি দেওয়া হয়েছিল।

>> পেঁয়াজ এলো চট্টগ্রাম বন্দরে
    
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০
এআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।