ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চবিতে দুই কারণে এখনও যুক্ত হয়নি নতুন ট্রেন

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০
চবিতে দুই কারণে এখনও যুক্ত হয়নি নতুন ট্রেন প্রতীকী ছবি।

চট্টগ্রাম: রেললাইনে থাকা কাঠের স্লিপার তুলে বসানো হচ্ছে কংক্রিটের পাটাতন। পরিবর্তন করা হচ্ছে লেভেল ক্রসিং গেটের সব যন্ত্রপাতি।

এছাড়া স্টেশনে আরও একটি প্ল্যাটফর্মের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেল রুটের সংস্কার কাজের বর্তমান চিত্র এটি।
 

নতুন ট্রেন চালুর লক্ষ্যে এমন কর্মযজ্ঞ চললেও চলতি বছরে নতুন ট্রেন যুক্ত হবে কি-না তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। মূলত বগি স্বল্পতা ও ফতেয়াবাদ অংশে ৬ কিলোমিটার অসমাপ্ত কাজের জন্য আটকে আছে চবি রুটে নতুন ট্রেন চলাচল। ফলে চলতি বছরের শুরুতে ট্রেন পাওয়ার কথা থাকলেও ৯ মাস পরও তা মেলেনি।
 
২০১৯ সালের ২৪ জুলাই রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে নতুন ট্রেন দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় রুটের সংস্কার কাজ দ্রুত সংস্কার করে ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা ২০০টি বগি থেকে ৬-৭টি বগি দিয়ে একটি নতুন ট্রেন দেওয়ার কথা জানান।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় রুটের ফতেয়াবাদ অংশের প্রায় ৬ কিলোমিটার কাজ এখনও শেষ হয়নি। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া থেকে সব বগি এখনও না আসায় এখনই নতুন ট্রেন দিতে পারছে না রেলওয়ে।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভূইয়া বাংলানিউজকে বলেন, নতুন ট্রেন দেওয়ার বিষয়ে রেলওয়ে এখনও কিছু জানায়নি। এ বিষয়ে রেলওয়ের সঙ্গে আমাদের কোনো বৈঠকও হয়নি।  

রেলওয়ে সূত্র জানায়, কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলরুটের সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। বর্তমানে রুটের স্লিপার ও লেভেল ক্রসিং গেটের সংস্কার কাজ চলছে। এ রুটের সব স্লিপার হবে কনক্রিটের। মূলত আখাউড়া-লাকসাম রেল সড়কের নির্মাণ প্রকল্পে রয়ে যাওয়া স্লিপার দিয়েই এই রুটের সংস্কার কাজ হচ্ছে। এছাড়াও চবিতে নতুন প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের কাজও এগিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে ১৫-২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চললেও রুট সংস্কার করার পর ট্রেন ৬০ কিলোমিটার বেগে চলবে। এতে দ্রুত সময়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে পারবেন।  

চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার শিক্ষার্থী শাটল ট্রেনে যাতায়াত করেন। রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, চবি রুটে ৬০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চললে ২২ মিনিটের মধ্যে শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছবেন শিক্ষার্থীরা।  

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) ফকির মো. মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে ২০০টি বগি আসার কথা। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সর্বশেষ ২২টি বগির চালান আসে। সেগুলো কয়েকদিন আগে পাহাড়তলী কারখানায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৫৮টি বগি এসেছে ইন্দোনেশিয়া থেকে।

তিনি বলেন, ঢাকা-মোহনগঞ্জে চলাচল করা ট্রেনটির পুরাতন বগি সরিয়ে সর্বশেষ আসা নতুন বগিগুলো যুক্ত করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) থেকে এই নতুন ট্রেনটি চলাচল করবে।  

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরদার সাহাদাত আলী বাংলানিউজকে বলেন, চবির রুটের ফতেয়াবাদ অংশে এখনও ৫-৬ কিলোমিটার কাজ বাকি। তবে এসব কাজ খুব শিগগিরই শেষ হবে বলে আশা করছি। কাজ শেষ হলে ৬-৭টি বগি দিয়ে একটি নতুন ট্রেন যুক্ত করতে পারবো।  

তিনি বলেন, বর্তমানে শাটল ট্রেনের গতিবেগ ১৫ কিলোমিটার। বিশ্ববিদ্যালয় রুটের সংস্কার কাজ শেষ হলে এ রুটে ৬০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানো যাবে। এতে আগের চেয়ে অর্ধেকেরও কম সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছবে শিক্ষার্থীরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বাংলানিউজকে বলেন, নতুন ট্রেন যুক্ত হলে শিক্ষার্থীদের পরিবহন সংকট অনেকাংশে কমে যাবে। আমরা আশা করছি, রেলওয়ে খুব শিগগিরই ট্রেনটি যুক্ত করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০
জেইউ/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।