ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জটিলতা ‘কাটিয়ে’ গতি পাচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
জটিলতা ‘কাটিয়ে’ গতি পাচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজে গতি ফিরছে। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: বন্দর ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের আপত্তি, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অনুমতি না পাওয়া, প্রকল্পের মাঝপথে নকশা পরিবর্তনসহ নানা জটিলতা ‘কাটিয়ে’ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজে গতি ফিরছে।
 

২০১৭ সালের জুলাইয়ে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজের অনুমোদন দেয় একনেক।

এর প্রায় দেড় বছর পর ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
 

তবে নির্মাণকাজ শুরুর পর নকশা নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের আপত্তি এবং কাজ শুরু করতে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অনুমতি না পাওয়ায় গতি হারায় এই প্রকল্প।

মার্চে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণকাজ।
 

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনার পর এখন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। বন্দর ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের আপত্তির মুখে নতুন নকশা প্রস্তুত করা হয়েছে। পিসি রোড এবং এক্সেস রোডের সংস্কার কাজ শেষের দিকে হওয়ায় ট্রাফিক বিভাগের অনুমতিও শিগগির মিলবে।
 

সব মিলিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পথে জটিলতাগুলো আস্তে আস্তে কাটছে বলে বলে মনে করছেন সিডিএ কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, চলতি বছরের মধ্যে পুরো পথে নির্মাণকাজ শুরু করে ২০২৩ সালের মধ্যেই স্বপ্নের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
 


প্রকল্প পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, আগের নকশায় লালখানবাজার থেকে বারেক বিল্ডিং মোড়, সল্টগোলা ক্রসিং, কাটগড় হয়ে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হওয়ার কথা ছিলো। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের আপত্তিতে এখন লালখানবাজার থেকে বারেক বিল্ডিং মোড়, সল্টগোলা ক্রসিং, কাটগড় হয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে গিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শেষ হবে।  
 

বন্দরের আপত্তিতে বারেক বিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকায় নতুন অ্যালাইনমেন্ট অনুযায়ী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি।
 

সিডিএ সূত্র জানায়, লালখানবাজার থেকে বারেক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার, বারেক বিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, সল্টগোলা ক্রসিং থেকে কাটগড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এবং কাটগড় থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার- এই ৪টি ভাগে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ শেষ করা হবে।
 

এর মধ্যে সল্টগোলা ক্রসিং থেকে কাটগড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এবং কাটগড় থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার পথে এখন কাজ চলছে। চলতি মাসে নতুন অ্যালাইনমেন্ট নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে বারেক বিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকায় কাজ শুরু করা হবে।
 

এছাড়া চসিকের অধীনে পিসি রোড এবং এক্সেস রোডের সংস্কার কাজ শেষের পর বিকল্প সড়ক তৈরি হলে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অনুমতি নিয়ে লালখানবাজার থেকে বারেক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
 

এই প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রায় ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ১৬ কিলোমিটার পথের ৮ কিলোমিটার পথজুড়ে নির্মাণ কাজ চলছে। বাকি ৮ কিলোমিটার পথে চলতি বছরের মধ্যে কাজ শুরু করা গেলে ২০২৩ সালের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ করতে পারবো।
 


এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ডিপিপি তৈরির সময় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সময়সীমা ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ধরা হয়। তবে নির্মাণ কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ায় এবং পুরো পথে কাজ শুরু করতে না পারায় ইতোমধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এটি আরও বাড়বে। তাই ব্যয়ও স্বাভাবিকভাবে বাড়বে।
 

সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বাংলানিউজকে জানান, বন্দর এলাকায় নতুন অ্যালাইনমেন্ট সেটেল হয়েছে। তবে এখনো অনুমতি পাওয়া যায়নি। বন্দর আমাদের জায়গা বুঝিয়ে দিলে আমরা কাজ শুরু করবো। চলতি মাসেই বন্দরের সঙ্গে একটি বৈঠক রয়েছে। সেখানে সবকিছু চূড়ান্ত হবে বলে আশা করছি।
 

তিনি বলেন, পিসি রোড এবং এক্সেস রোড়ের সংস্কার কাজ এই বছর শেষ হবে বলে চসিকের প্রশাসক মহোদয় জানিয়েছেন। আমাদের রিং রোড় দিয়েও যান চলছে। এই তিনটি সড়কে যান চলাচল শুরু হলে লালখানবাজার থেকে বারেক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত পথে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ট্রাফিক পুলিশের আর কোনো আপত্তি থাকবে না বলে আমাদের জানানো হয়েছে।
 

‘সল্টগোলা ক্রসিং থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার পথে নির্মাণকাজ চলছে। লালখানবাজার থেকে বারেক বিল্ডিং হয়ে সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত বাকি ৮ কিলোমিটার পথে কাজ শুরু করতে আমরা মুখিয়ে আছি। সব জটিলতা কাটিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ পুরোদমে শুরু করতে চাই। ’
 

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।