ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভাড়া কমায় স্বস্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২০
ভাড়া কমায় স্বস্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ ভাড়া কমলেও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগে যাত্রীরা। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে ৬০ শতাংশ বাড়ানো গণপরিবহন ভাড়া কমানোতে যাত্রীরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন। বাস, মিনিবাস, টেম্পুতে যত আসন তত যাত্রী নেওয়ায় ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোচ্চ নজর যাত্রীদের।

মাস্ক, হ্যান্ডগ্লাভস, ফেস শিল্ড, প্লাস্টিকের স্বচ্ছ চশমা, ফুলহাতা শার্ট, সু বা ক্যাডস পরার পাশাপাশি নিয়মিত বিরতিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার মাখা বা স্প্রে করছেন অনেকে। স্বল্প দূরত্বের লোকজন বাস-মিনিবাস, রিকশা, টেম্পুতে না উঠে হেঁটেই গন্তব্যে বা কর্মস্থলে যাচ্ছেন।

 

লালখানবাজার মোড়ে কথা হয় কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে আসা আনিসুল হকের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কথা ছিলো যত আসন তত যাত্রী নেবেন। কিন্তু লোকাল বাসগুলোর দরজার কাছে অনেক যাত্রীকে দেখেছি দাঁড়িয়ে আছে। এ ছাড়া বাসগুলোর মধ্যে অসম প্রতিযোগিতাও রয়েছে যাত্রী তোলা আর ওভারটেক করার ব্যাপারে। যদি সব বাস একটি মালিক সমিতির অধীনে আনা হতো তাহলে ভালো হতো।  

আরেকজন যাত্রী ঝুলন দত্ত বলেন, এখন নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিজের ওপর। নিজেকেই সচেতন থাকতে হচ্ছে বাসে। বাঁচতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে।  

চকবাজার থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত টেম্পু সার্ভিসের নিয়মিত যাত্রী কামরুন আকতার জানান, করোনার পর চালকের সামনে একজন এবং ভেতরে ১২ জনের জায়গায় ৬ জন যাত্রী নেওয়া হতো। আজ সব আসনে যাত্রী ছিল। এমনকি দুই-একজন পেছনে দাঁড়িয়েও ছিল।   

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, নগরে যত রুট আছে সেখানে আমাদের বাস-মিনিবাস চলছে। কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা সিবিচ, ভাটিয়ারি থেকে নিউমার্কেটসহ অন্যান্য রুটে চলাচলকারী বাস-মিনিবাস মালিকদের সভা করে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, চালক বা স্টাফদের খামখেয়ালিপনার কারণে প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মামলা দিলে বা জরিমানা করলে সমিতি তার দায় নেবে না।

তিনি বলেন, আমরা জানিয়ে দিয়েছি রুটের প্রান্তসীমায় গাড়ি পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে জীবাণুনাশক মেশানো পানি স্প্রে করে দেওয়ার জন্য। প্রত্যেক চালক ও স্টাফ যেন মাস্ক পরেন।  
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গত ৬ মাস আমরা গণপরিবহন ব্যবসা করিনি। আরও ২ মাস স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিট ক্যাপাসিটি অনুযায়ী গাড়ি চালালে অসুবিধা নেই। জীবিকার পাশাপাশি জীবনের কথাও ভাবতে হবে।   

চট্টগ্রাম-নাজিরহাট-খাগড়াছড়ি বাস মিনিবাস মালিক সমিতির প্রচার সম্পাদক মো. শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, করোনার আগে নিউমার্কেট থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত দ্রুতযান সার্ভিসে ভাড়া নিতাম ৩০ টাকা। করোনাকালে ৬০ শতাংশ বাড়ানোর পর নেওয়া হতো ৫০ টাকা। এখন আবার আগের নিয়মে ৩০ টাকাই নেওয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, খাগড়াছড়ি রুটে শান্তি এক্সপ্রেসে আগে ভাড়া ছিল ১৯০ টাকা। করোনাকালে ২ আসনে এক যাত্রী হিসেবে ভাড়া নেওয়া হতো ৩০০ টাকা। এখন আগের নিয়মে ১৯০ টাকা প্রতি আসনে যাত্রী। অক্সিজেন ফটিকছড়ি রুটে ৪৫ টাকার ভাড়া ৭০ টাকা হয়েছিলো, এখন আগের ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।  

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীরা যাতে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে গাড়িতে উঠতে পারেন সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বায়েজিদ কাউন্টারেও একই ব্যবস্থা আছে। অক্সিজেন মোড়ে জায়গা না থাকায় সেটি করা সম্ভব হচ্ছে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১০০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২০
এআর/টিসি  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।