ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৪৩২২ কনটেইনার ডেলিভারি ২৪ ঘণ্টায় 

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২০
৪৩২২ কনটেইনার ডেলিভারি ২৪ ঘণ্টায়  ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম: করোনাকালে ‘জীবন ও জীবিকা’ রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি বহুমুখী উদ্যোগের ফলে ক্রমে চাঙা হচ্ছে অর্থনীতি। পুরোদমে উৎপাদন চলছে ছোট-বড় প্রায় সব কারখানায়।

এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানি পণ্যের ডেলিভারিও বাড়ছে।  


মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সকাল আটটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় বন্দর থেকে ডেলিভারি হয়েছে ৪ হাজার ৩২২ টিইইউ’স (২০ ফুট দীর্ঘ হিসেবে) কনটেইনার।

৪৯ হাজার ১৮ টিইইউ’স ধারণক্ষমতার বিপরীতে বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড ও টার্মিনালে কনটেইনার ছিলো ৩৮ হাজার ৩৯৯ টিইইউ’স। আগের দিন সোমবার ডেলিভারি হয়েছিলো ২ হাজার ৭৩০ টিইইউ’স।
 

সূত্র জানায়, করোনাকালের শুরুর দিকে বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারি মারাত্মকভাবে কমে যায়। তীব্র কনটেইনার ও জাহাজজট দেখা দেয়। এরপর সরকারের হস্তক্ষেপে বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলোতে প্রায় সব ধরনের পণ্যের কনটেইনার নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। এরপর ধীরে ধীরে তৈরি পোশাকসহ কলকারখানা খোলার পর বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারি বাড়তে থাকে। সম্প্রতি তা আড়াই হাজার-তিন হাজারে উন্নীত হয়। ঈদুল আজহার ছুটির পর ৬ আগস্ট ৩ হাজার ৫৯৩ টিইইউ’স ডেলিভারি হয়। এর আগে ২২ জুলাই ডেলিভারি হয়েছিলো ৩ হাজার ৪৫০ টিইইউ’স। ২৯ জুলাই হয় ৪ হাজার ১৬ টিইইউ’স, ৩০ জুলাই হয় ৩ হাজার ৮৭৭ টিইইউ’স।  
 

বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, এখন চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট নেই। কনটেইনার জট নেই। কনটেইনার ডেলিভারিও বাড়ছে। কিন্তু দেশের অর্থনীতির যে আকার, আমদানি-রফতানির প্রবৃদ্ধি এসব ঠিক রাখতে হলে আমাদের স্বাভাবিক সময়ে গড়ে ৪ হাজার টিইইউ’স ডেলিভারি দিতে হবে। নয়তো আবার জট লেগে যাবে। কারণ একসঙ্গে ৯-১০টি জাহাজ থেকে জেটিতে আমদানি পণ্যভর্তি কনটেইনার নামছে। এক্ষেত্রে ডেলিভারি স্বাভাবিক রাখতে আমরা আমদানিকারক, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতা চাই।    
 

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এখন বন্দরে জাহাজজট নেই। আমদানি বাড়তে থাকায় জাহাজের সংখ্যাও বাড়ছে। আশাকরি, করোনাকালের স্থবিরতা কাটিয়ে শিগগির সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।   
 

এফবিসিসিআই ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক, শিপিং ব্যবসায়ী আমিরুল হক বাংলানিউজকে বলেন, দু-একটি দেশ ছাড়া বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হচ্ছে। দেশে কাঁচামাল আমদানি, উৎপাদন, রফতানি ক্রমে বাড়ছে। তাই দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর থেকে আমদানি পণ্যের চালান খালাস বাড়ছে। মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত বন্দরে আসা অনেক কনটেইনার ডেলিভারি হয়েছে। এর সঙ্গে নতুন এলসির চালানও খালাস হচ্ছে।  
 

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডারস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বাংলানিউজকে জানান, নিঃসন্দেহে করোনাকালীন সময়ের প্রথম দিকের চেয়ে এখন বন্দর থেকে ডেলিভারি বাড়ছে। পাশাপাশি রফতানিও বাড়ছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, গত জুলাই মাসে রফতানি হয়েছে প্রায় ৭২ হাজার টিইইউ’স কনটেইনার পণ্য। যা গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।  
 

বন্দরের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে বন্দরের মেইন জেটিতে ৯টি কনটেইনার জাহাজে, ৬টি সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজে, ১টি ক্লিংকার নিয়ে আসা জাহাজে কাজ হয়েছে। বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ ছিলো ২টি জাহাজ। এ ছাড়া বহির্নোঙরে সাধারণ পণ্যবাহী ১১টি, খাদ্যশস্যের ২টি, সারের ২টি, সিমেন্ট ক্লিংকারের ১৫টি, চিনির ২টি মিলে ৩৩টি জাহাজে লাইটারিং বা পণ্য খালাস হয়েছে। এর বাইরে ১৪টি জাহাজে পণ্য খালাস হয়নি বহির্নোঙরে। এ ছাড়া রিভারমুরিং ও স্পেশাল বার্থে ১টি ক্লিংকারবাহী এবং ২টি অয়েল ট্যাংকারে কাজ হয়েছে।   

বাংলাদেশ সময়: ২২২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২০
এআর/এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।