চট্টগ্রাম: প্রতি বছর কোরবানির দিন নতুন নতুন মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীর দেখা মেলে। দিন শেষে তাদের বেশিরভাগেরই লোকসান হয়।
কেন এমন ঘটনা ফি বছর ঘটছে জানতে চাইলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমত চামড়া পচনশীল পণ্য।
দ্বিতীয়ত ট্যানারি মালিকরা লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেন। কোরবানির চামড়া কেনার পর দক্ষ শ্রমিক দিয়ে চামড়ায় লেগে থাকা মাংস-চর্বি পরিষ্কার করে, পরিমাণ মতো লবণ ছিটিয়ে, ট্যানারিতে পৌঁছানো পর্যন্ত সব খরচ হিসাব করে চামড়া কিনবেন আড়তদার। প্রতি বর্গফুটে আড়তদারের খরচ প্রায় ১০ টাকা। তার ওপর মোট চামড়ার ২০ শতাংশ নানা কারণে ট্যানারি বাদের হিসাবে ফেলে। এখন কোনো অনভিজ্ঞ লোক যদি কোন চামড়া কত বর্গফুট জমবে তা হিসাব না করে বেশি দামে কিনে তাহলে লোকসানের আশঙ্কা আছে।
একটি গরুর আকার ভেদে চামড়া ১৫ ফুট থেকে ৪০ ফুট, মহিষ ২০-৪৫ ফুট, ছাগলের চামড়া ৪-৫ ফুট হয়ে থাকে।
এ ছাড়া গরুর চামড়ায় পেটের দিকে যদি ৪-৫টি কাটা থাকে, পোড়া থাকে, ২১ ফুটের কম থাকে তবে ওই চামড়া ট্যানারিতে বাদ। এ ছাড়া চামড়ায় যদি আঁচিল থাকে, কালো তিল থাকে, স্বেতী দাগ থাকে, ট্রাকে রশি বাঁধার দাগ থাকে এসব নেতিবাচক হিসেবে দেখা হয়। একজন অভিজ্ঞ চামড়া বেপারী চামড়া দেখা মাত্রই বাজার মূল্য হিসাব করতে পারেন, যা নতুন মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা পারেন না। তাদের চামড়ার কেনা দামের সঙ্গে গাড়িভাড়াসহ অানুষঙ্গিক খরচ হিসাব করতে হবে।
চামড়ার ব্যবসা আর দশটা ব্যবসার মতো নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি ব্যতিক্রম ব্যবসা। যেখানে চোখের পলকে হিসাব করে ফেলতে হবে সর্বনিম্ন বিক্রয় মূল্য, আনুষঙ্গিক খরচ, লাভ। অভিজ্ঞতা ছাড়া এ ব্যবসায় খুব একটা সুবিধা করা যায় না। অনেক অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বেশি দামে চামড়া কেনেন, যে কারণে লোকসান দেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম এ বছর ঢাকাতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১৩ থেকে ১৫ টাকা ও বকরির চামড়া ১০ থেকে ১২ টাকা ধরা হয়েছে।
গত বছর এ দাম ছিল যথাক্রমে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা ও ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে ঢাকায় ১০ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৮ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২০
এআর/টিসি