তিনি বলেন, এবার করোনা মহামারির ছোবলের মধ্যেই কোরবানি আসায় তা ধর্মীয় গাম্ভীর্য ও আনুষ্ঠানিকতা রক্ষায় সীমিত ও নিয়ন্ত্রণমূলক বিধি-ব্যবস্থা মেনে পালিত হবে। এবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কোরবানির পশুর হাটগুলো সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি পুঙ্খানুপুঙ্খ মেনে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা দূরীভূত করতে।
এ ছাড়া বয়স্ক ব্যক্তি এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু-কিশোররা পশুর হাটে আসতে পারবেন না এবং পশু ক্রেতার সঙ্গে সর্বোচ্চ দুইজনের বেশি যাওয়া যাবে না।
সোমবার (১৩ জুলাই) সকালে টাইগারপাসের চসিক সম্মেলন কক্ষে পশুরহাট ইজারাদারদের সঙ্গে বৈঠকে সিটি মেয়র এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি জানান, পশুর হাটে জীবাণুনাশক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা থাকবে। এর বাইরে হাট ইজারাদারগণ বিক্রেতাদের ক্রেতাদের হাত ধোয়ার পানি, সাবান ও টিস্যু পেপার সরবরাহ ও শরীরের তাপমাত্র মাপার ব্যবস্থা নেবে। ক্রেতা বিক্রেতা প্রত্যেককেই অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতসহ হাটে প্রবেশমুখে ও হাটের ভেতরে মাক্স ব্যবহার করুন, হাত ধৌত করুন ও সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন- লেখা ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙানোর ব্যবস্থা করবেন।
চসিকের পক্ষ থেকে পশুর রোগ-বালাই চিহ্নিত করার জন্য হাটগুলোতে চিকিৎসক থাকবেন এবং পশুর গোসল ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় পানির ব্যবস্থা, খাবার ও আবর্জনার জন্য নির্ধারিত স্থান থাকবে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, সরকার,প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বান্ধব পশুর হাট বসানোর সামগ্রিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতাদের যে আবশ্যিক দায়িত্বগুলো রয়েছে তাও অবশ্যই পালন করতে হবে। আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পশু বেচা-কেনার বিষয়টি সম্পন্ন করতে হবে কোনো ভাবেই দরদাম যাচাই-বাছাই দেখা বা পরে কিনব, বিক্রি করব এসব চিন্তা ভাবনা করে অহেতুক সময়ক্ষেপণ করা হলে লোকসমাগম ঠেকানো সম্ভব হবে না এবং এর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকতে পারে।
সিটি মেয়র তার বক্তব্যে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি সংস্থার চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা-বোনাস আগে-ভাগে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রায় ক্ষেত্রেই ঈদের দু-একদিন আগেই চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা-বোনাস দেওয়া হতো এর ফলে শেষের দিকে পশুর হাটগুলোতে ভিড় উপচে পড়ে এবং বিক্রেতারাও ক্রেতাদের বেতন-বোনাস না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন। তাই পশুরহাটে শেষের দিকে উপচে পড়া ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত। এবার যাতে সে ধরনের অবস্থার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য তিনি সরকার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ সময় কাউন্সিলর এএফএম কবির মানিক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, এস্টেট অফিসার এখলাস উদ্দিন আহমদ, ইজারাদারের মোহাম্মদ সাইফুল হুদা জাহাঙ্গীর, মোহাম্মদ মামুন, মোহাম্মদ ওয়াহিদুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ আজাদ, নজরুল ইসলাম মিন্টু, মোহাম্মদ জামসেদ, মোহাম্মদ ফারুক বাবুর্চি, আবদুর রশিদ লোকমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে জনসচেতনা ও পশুর হাটের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রামাণ্য চিত্র উপস্থাপন করেন চুয়েটের ছাত্রী তাসফিয়া তাজনিম ও অর্ক।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
এআর/টিসি