ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

লকডাউন শেষে পুরোদমে চলছে র‍্যাংকস এফসির নির্মাণকাজ

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
লকডাউন শেষে পুরোদমে চলছে র‍্যাংকস এফসির নির্মাণকাজ লকডাউন শেষে পুরোদমে চলছে র‍্যাংকস এফসির নির্মাণকাজ।

চট্টগ্রাম: দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগ্রুপ রেনকন হোল্ডিংসের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান র‍্যাংকস এফসি প্রোপার্টিস লিমিটেড এর আবাসন প্রকল্পগুলো সাড়া ফেলেছে গ্রাহকদের মাঝে, অর্জন করেছে সন্তুষ্টি। করোনা মহামারীর এই সময়েও গ্রাহককে দেওয়া অঙ্গীকার রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ।

সরেজমিন দেখা গেছে, নগরের এমএম আলী রোড, মেহেদিবাগ, হালিশহর, পাঁচলাইশ, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি, নাসিরাবাদ প্রোপার্টিস, আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোড এলাকার প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আবাসিক এলাকার বাইরের প্রকল্পগুলোতে প্রতিদিন দুই শিফটে চলছে কাজ।

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে একটির পরিবর্তে লেবার শেড করা হয়েছে দুটি। শ্রমিকদের দূরত্ব মেনে কাজ করা ও থাকার ব্যাপারে সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন সংশ্লিষ্ট তত্ত্বাবধায়করা।

এছাড়া সবগুলো প্রকল্প এলাকায় মিনি আইসোলেশন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জীবাণুনাশক স্প্রে করাসহ কোনও শ্রমিক অসুস্থ হলে তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থাও রেখেছে র‍্যাংকস এফসি প্রোপার্টিস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে কর্মীদের  চিটাগাং ফিল্ড হসপিটাল অগ্রাধীকার সেবা দিচ্ছে যেকোনও প্রয়োজনে।

...

র‍্যাংকস এফসি করোনা মহামারীর শুরুর দিকেই কর্মী এবং গ্রাহকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে প্রথমে অলটারনেটিভ ওয়ার্ক ডে পরবর্তীতে ২৬ মার্চ থেকে ৭ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি এবং ৩১ মে পর্যন্ত ওয়ার্ক ফ্রম হোম পদ্ধতি অনুসরণ করে। এই সময় স্বল্প পরিসরে প্রকল্পগুলোতে কাজ চলে। তবে ৩১ মে লকডাউন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হলে আবারো অলটারনেটিভ ওয়ার্ক ডে চালু করে র‍্যাংকস। এসময় প্রতিটি প্রকল্প আবারও পুরোদমে চালু করে প্রতিষ্ঠানটি।

জানা গেছে, এমএম আলী রোডের ‘মেমোরি-৭১’ প্রকল্পটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই প্রকল্পের অধিকাংশ ফ্ল্যাটই  বিক্রি হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, গ্রাহকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতির ৬ মাস আগে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই তাদের কাছে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা যাবে। এছাড়া ঈদুল আজহার পর নাসিরাবাদ প্রপার্টিজ এলাকায় ২টি, পাঁচলাইশ এলাকার ২ টি সহ মোট ৪টি নতুন প্রকল্পের কাজ তারা শুরু করবেন।

র‍্যাংকস এফসি থেকে অ্যাপার্টমেন্ট, অফিস, দোকান কিংবা শো-রুম কিনলে গ্রাহকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দিচ্ছে আইপিডিসি, এমটিবি, ডিবিএইচ, এসসিবি।

লকডাউন শেষে পুরোদমে চলছে র‍্যাংকস এফসির নির্মাণকাজ

র‍্যাংকস এফসি’র প্রত্যেকটি ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোর ন্যূনতম ১৫-৩০ ফুট উচ্চতায় তৈরি হয়ে থাকে। ছোট ছোট  বারান্দার পরিবর্তে উঠোনের মতো বিশাল টেরেস গার্ডেন থাকে প্রত্যেক প্রকল্পে। প্রথাগত ল্যান্ডস্ক্যাপিং এর পরিবর্তে ভার্টিক্যাল ফরেস্ট থাকছে এসব প্রকল্পে। এছাড়া থাকছে কমিউনিটি ইন্টারেকশনের জন্য স্টার লাউঞ্জ, ইকুইপড জিম, হোটেল গ্রেডেড ইনফিনিটি পুল, থিয়েটার, লাইব্রেরি সহ নানান সুবিধা। কমন স্পেস ক্যালকুলেশনেও বাংলাদেশ রিয়েল এস্টেট অ্যাক্ট-২০১০ অনুসরণ করে আসছে  র‍্যাংকস এফসি প্রোপার্টিস লিমিটেড।

আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার র‍্যাংকস এফসি’র করপোরেট অফিসে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করছেন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গ্রাহকদের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া, প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা, অফিসিয়াল মিটিংসহ যাবতীয় কাজ চলছে সামাজিক দূরত্ব রক্ষার নিয়ম মেনেই। অনেক গ্রাহক অফিসে আসছেন, প্রকল্প ভিজিট করছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে । বুকিং দিচ্ছেন কেউ কেউ ।

পাশাপাশি যারা ঘরে বসেই প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইছেন কিংবা ফ্ল্যাট বুকিং দিতে চাইছেন, তাদের সঙ্গেও অনলাইনে যোগাযোগ রেখে সব কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। ব্যবহার করা হচ্ছে ইলেকট্রনিক ব্রুশিয়ার। পাশাপাশি  র‍্যাংকস এর মার্কেটিং টিম এআর ও ভিআর প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকদের বিভিন্ন প্রকল্পের ভার্চ্যুয়াল ট্যুর করাবার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে।

...

র‍্যাংকস এফসি প্রোপার্টিস লিমিটেড এর সিইও, দেশের তরুণ কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব প্রকৌশলী তানভীর শাহরিয়ার রিমন বাংলানিউজকে বলেন, প্রথাগত ডেভলপার প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের আবদ্ধ না রেখে নানা রকম ডিজাইন ইনোভেশন নিয়ে কাজ করছি আমরা। আমাদের সব ধরনের আর্কিটেকচারাল এবং ইন্টেরিয়র সল্যুশন দিচ্ছে রেনকন কোম্পানী- ইনস্পেস আর্কিটেক্টস । এখানে কাজ করছেন অনেক উচ্চমান সম্পন্ন স্থপতিরা। ইতোমধ্যে হস্তান্তরকৃত প্রকল্পগুলো গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আমাদের প্রকল্পগুলো হস্তান্তর পরবর্তী সেবার কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। যে কোনও প্রয়োজনে আমাদের সার্ভিস টিম গ্রাহকদের সহযোগিতা করে আসছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। বেশ কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে এটা আমার কাছে খুব অসম্ভব লক্ষ্যমাত্রা বলে মনে হচ্ছে না।   আমরা যে সেবা-শিল্পে কাজ করছি তার গতি প্রকৃতি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে ওঠা-নামা করে। বাজেটে অপ্রদর্শিত টাকা আবাসন খাতে বিনিয়োগ করে সাদা করার সুযোগ দেওয়ায় আবাসন খাত নিশ্চিতভাবেই একটা গতি পাবে।
 
লকডাউন শেষে পুরোদমে চলছে র‍্যাংকস এফসির অফিস।

তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে যখন দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি টেকসই ছিল, তখন আবাসন খাত মন্দা কাটিয়ে বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। দেশের জিডিপিতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ১২ শতাংশ অবদান রাখছে আবাসন খাত। চলমান করোনা মহামারিতে দেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীক খাতগুলোর মধ্যে এই আবাসন খাত অন্যতম। এ খাতের সঙ্গে যেমন জড়িত নির্মাণ শ্রমিকদের ভাগ্য তেমনি জড়িত কয়েক লাখ পেশাজীবীর ভবিষ্যত। দীর্ঘ ২ মাসের লকডাউন পরিস্থিতিতে এই সেবাখাত অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ছুটি শেষ হলেও এখনও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোপুরি সচল হয়নি ।

রোজার ঈদের আগে অফিস খোলার পর আমরা ‘কর্মী এবং গ্রাহকদের সুরক্ষাই প্রথম অগ্রাধিকার’ নীতিতে এগিয়েছি । শ্রমিকের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টিও মাথায় রেখে কাজ করছি। নতুন করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের অফিস এবং প্রকল্প সাইটগুলো ঢেলে সাজিয়েছি । এতে ব্যয় বাড়ছে, তবুও আমরা এটাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছি’।
 
করোনা পরিস্থিতিতে র‍্যাংকস এর অ্যাপার্টমেন্ট প্রাইস কমবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে । তাছাড়া আমাদের আর্কিটেকচার  ডিজাইন অ্যাক্সিলেন্স এর কারণে এর স্টাকচারাল সল্যুশন অত্যন্ত মজবুত এবং ব্যয়বহুল । আমরা উন্নত কাঁচামাল এবং ফিনিশিং মেটেরিয়াল ব্যবহার করি । কমিউনিটি ফ্যাসিলিটি এবং ভার্টিকাল গ্রীন তৈরিতে বর্গফুট প্রতি ব্যয় অনেক বেড়ে যায় । এবং এই কাজগুলো বাস্তবায়নে আমাদের যে মানের লোকবল আছেন তারা সাধারণ প্রতিষ্ঠানের লোকবল থেকে অনেক বেশি পেশাদার, দক্ষ এবং ডায়নামিক । কাজেই একটি ভালো মানের প্রডাক্টের জন্য ভালো প্রাইস তো দিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।