সোমবার (১৩ জুলাই) ডবলমুরিং থানায় মামলাটি দায়ের করেন মো. সাইফুদ্দিন (৫৫) নামে এক ব্যক্তি। তিনি গাড়ির টায়ার ও যন্ত্রাংশ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মেগা মোটরর্সের মালিক জিয়া উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের পক্ষে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম ছাড়াও শহীদুল্লাহ (৬০) নামে আরও একজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে মেগা মোটরর্সের মালিক জিয়া উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের নামে প্রতারণার মাধ্যমে ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ডবলমুরিং থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমসহ আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মেগা মোটরর্সের আমদানি করা থ্রি-হুইলার ঢাকা সিটিতে চলাচলের রুট পারমিটসহ চলাচলের আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি নিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করে মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম। এর জন্য সাহেদ করিম মেগা মোটরর্সের মালিক জিয়া উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি সাহেদ করিমের প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঢাকা অ্যাভিনিউ গেইট শাখার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নগদ ৩০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন।
একই বছরের ২৫ জানুয়ারি প্রিমিয়ার ব্যাংকের চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ শাখার মাধ্যমে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ৩০ জানুয়ারি ৫ লাখ টাকা, ১ ফেব্রুয়ারি ৫ লাখ টাকা, ১৩ ফেব্রুয়ারি ৬ লাখ টাকা, ১৬ ফেব্রুয়ারি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২ লাখ টাকা, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২ লাখ টাকা, ৫ মার্চ ১ লাখ টাকাসহ মোট ৫৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেন সাহেদ করিম।
এছাড়া ৪ ফেব্রুয়ারি ১৮ লাখ, ৮ ফেব্রুয়ারি ৬ লাখ, ২০ ফেব্রুয়ারি ১ লাখ ও ৭ মার্চ ৭ লাখ টাকা মেসার্স মেগা মোটরর্সের অফিসে এসে নগদ গ্রহণ করেন রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম।
বিভিন্ন লোকজনের নাম ভাঙিয়ে মোট ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা গ্রহণ করে ২০১৭ সালের ৫ মার্চ মেগা মোটর্সকে বিআরটিএ চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর করা একটি পরিপত্রের ফটোকপি দেন মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম। সেখানে ২০০ সিএনজি থ্রি-হুইলারকে ঢাকা সিটিতে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ ছিল। পরে মেসার্স মেগা মোটরর্স কর্তৃপক্ষ বিআরটিএতে যোগযোগ করলে পরিপত্রের ফটোকপিটি ভুয়া বলে জানতে পারেন মেসার্স মেগা মোটর্সের মালিক জিয়া উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
মামলার বাদি মো. সাইফুদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আমি গাড়ির টায়ার ও যন্ত্রাংশ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মেগা মোটরর্সের মালিক জিয়া উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের আত্মীয়। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমি তার ব্যবসা দেখাশুনা করি। রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম মেসার্স মেগা মোটরর্সের আমদানি করা থ্রি-হুইলার ঢাকা সিটিতে চলাচলের রুট পারমিটসহ চলাচলের আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি নিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করে মোট ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা গ্রহণ করে।
“টাকা গ্রহণ করে ২০১৭ সালের ৫ মার্চ মেগা মোটর্সকে বিআরটিএ চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর করা একটি পরিপত্রের ফটোকপি দেন। সেখানে ২০০ সিএনজি থ্রি-হুইলারকে ঢাকা সিটিতে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ ছিল। পরে আমরা বিআরটিএতে যোগযোগ করলে পরিপত্রের ফটোকপিটি ভুয়া বলে জানতে পারি। তারপর থেকে সাহেদ করিমের কাছ থেকে টাকা ফেরত চাইলে টাকা ফেরত না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। আমরা বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে এতদিন অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু সে পথ বন্ধ হয়ে গেছে তাই আইনের আশ্রয় নিয়েছি। ” বলেন মো. সাইফুদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
এসকে/টিসি