ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৩০ মিনিটে মোবাইলের পরিচয় পরিবর্তন করে আহসান!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
৩০ মিনিটে মোবাইলের পরিচয় পরিবর্তন করে আহসান! ৩০ মিনিটে মোবাইলের পরিচয় পরিবর্তন করে আহসান!

চট্টগ্রাম: ২৪ বছর বয়সী আহসান হাবিব। উচ্চ মাধ্যমিক পাস। জীবিকার তাগিদে রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় মোবাইল মেরামতের দোকানে চাকরি নিয়েছিলেন। কয়েক বছর চাকরি করে আয়ত্ব করেছেন কীভাবে মোবাইল মেরামত করতে হয়। মোবাইল মেরামতের কাজ শিখতে গিয়ে নিজ উদ্যোগে শিখেছেন মোবাইল সংক্রান্ত সফটওয়্যারের নানা কাজ।

রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় আসা বিভিন্ন চোরাই মোবাইল ও বিদেশ থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা মোবাইলের লক খোলা ও আইএমইআই পরিবর্তনের কৌশলও আয়ত্ব করেন।

রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় প্রতিনিয়ত আসা চোরাই মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করে তা আবার বিক্রি করা হয়।

বিদেশ থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা মোবাইলগুলোর লক খুলে ও আইএমইআই পরিবর্তন করে তা বিভিন্ন নামিদামি দোকানেও বিক্রি করা হয়।

আহসান হাবিবকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ।

রোববার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় রিয়াজউদ্দিন বাজার তামাকুমণ্ডি লেইনের হাসিনা হক মার্কেটের নিচতলার একটি দোকান থেকে আহসান হাবিবকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন।

তার কাছ থেকে দুইটি ল্যাপটপ, সিমকার্ড, কয়েকটি মোবাইল সেট, লক খোলার বিভিন্ন সফটওয়্যার ও সরঞ্জামসহ ডিভাইস জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত নানা জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

গ্রেফতার আহসান হাবিব সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া হাতিয়ারপুল বাজার এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে।

যেসব মোবাইল চুরি বা ছিনতাই হয় সেসব মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তনের ফলে তা আর সহজে খুঁজে পায় না পুলিশ। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এসব অপকর্ম করে আসছে আহসান হাবিবসহ অন্যরা।

অভিযান পরিচালনাকারী কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সজল দাশ বাংলানিউজকে বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আহসান হাবিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আহসান হাবিব ডিভাইস জালিয়াতি চক্রের একজন সদস্য। বিভিন্ন চোরাই ও ছিনতাই হওয়া মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করে বিক্রি করে থাকে। এসব মোবাইল সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে থাকেন।

এসআই সজল দাশ বলেন, মাত্র ৩০ মিনিটের ভেতর একটি মোবাইলের লক খুলে তার আইএমইআই পরিবর্তন ও অন্যান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি মোবাইলে পরিচয় চেঞ্জ করে ফেলতে পারে আহসান হাবিব। শুরুতে মোবাইল মেরামতের দোকানে চাকরি করতো। পরে মেরামতের কাজ শেখার পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে ডিভাইস জালিয়াতির কাজও আয়ত্ব করে। অনেক দিন ধরে এসব কাজ করে আসছে।

চোরাই মোবাইল ব্যবসায় জড়িত ২৫ ব্যবসায়ী

রিয়াজউদ্দিন বাজার কেন্দ্রিক চোরাই ও ছিনতাই হওয়া মোবাইল এবং বিদেশ থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা মোবাইল কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত অন্তত ২৫ ব্যবসায়ীর বিষয়ে জানতে পেরেছে পুলিশ। তাদের বিস্তারিত সংগ্রহ করছে পুলিশ।

এসব ব্যবসায়ীরা চোরাই মোবাইল কম দামে কিনে আহসান হাবিব ও অন্য যারা ডিভাইসের পরিচয় চেঞ্জ করে ফেলে তাদের মাধ্যমে কাজটি করিয়ে দোকানে বিক্রি করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্য ও বিভিন্ন দেশ থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা মোবাইলও লক খুলে আইএমইআই চেঞ্জ করে বিভিন্ন নামিদামি দোকানে বিক্রি করা হয় বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

এসআই সজল দাশ বাংলানিউজকে বলেন, রিয়াজউদ্দিন বাজার কেন্দ্রিক চোরাই ও ছিনতাই হওয়া মোবাইল এবং বিদেশ থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা মোবাইল কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত অন্তত ২৫ ব্যবসায়ীর বিষয়ে জানতে পেরেছি। তাদের নাম পেয়েছি। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
এসকে/এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।