বাংলানিউজ: গত তিন মাস করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিলেন, অভিজ্ঞতা কেমন?
ডা. আব্দুর রব: প্রথম যখন কাজ শুরু করেছিলাম তখন আমাদের কাছে কিছুই ছিল না। প্রথমদিকে রোগীদের আমরা এক রকম চিকিৎসা দিতাম।
বাংলানিউজ: করোনার চিকিৎসা দিতে গিয়ে কি কি প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন?
ডা. আব্দুর রব: আমাদের কোনও ভালো মানের পিপিই ছিল না, এন৯৫ মাস্ক ছিল না।
বাংলানিউজ: হাসপাতালে কি কি সমস্যা ছিল, যা করোনা চিকিৎসার অন্তরায় হিসেবে কাজ করেছে?
ডা. আব্দুর রব: প্রথমদিকে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা ছিল না। বর্তমানে হাসপাতালে প্রায় ১৭০টি সিলিন্ডার রয়েছে। এসব সিলিন্ডার রিফিল করতে তখন দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগতো। এখন সেই সংকটও কেটে যাচ্ছে। এছাড়া ১০ শয্যার আইসিইউ হয়েছে হাসপাতালে। বর্তমানে হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জনবলের সংকটও ছিল প্রচুর। বর্তমানে তা অবশ্য কমে এসেছে।
বাংলানিউজ: বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনারা কি কি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন?
ডা. আব্দুর রব: বর্তমানে এন-৯৫ মাস্ক এর সংকট রয়েছে। এছাড়া অন্য সবকিছু ঠিক রয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট প্রস্তুত হয়ে গেলে আমাদের আর কোনও সমস্যা থাকবে না। তবে করোনা রোগীদের কিডনি ডায়ালাইসিস সুবিধা থাকলে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যেতাম।
বাংলানিউজ: করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতে কি করতে হবে এবং করোনা আক্রান্ত হলে কি করা উচিত?
ডা. আব্দুর রব: যে স্বাস্থ্যবিধি রয়েছে তা পূর্ণাঙ্গভাবে পালন করা, ঘন ঘন হাত ধোয়ার অভ্যাস করা, মাস্ক পরে বের হওয়া, বাহির থেকে ফিরে গরম পানি দিয়ে কাপড়-চোপড় ধুয়ে ফেলা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা জরুরী। এছাড়া কেউ আক্রান্ত হলে প্রথমে নিজেকে আইসোলেশনে রাখা উচিত। করোনা শনাক্তের পর বিভিন্ন টেস্ট করে রোগীর অবস্থা সম্পর্কে জানা এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা শুরু করতে হবে। রোগীর সঙ্গে অক্সিমিটার রাখা উচিত, যাতে সবসময় অক্সিজেন স্যাচুরেশন দেখা যায়।
বাংলানিউজ: করোনার চিকিৎসায় সফলতা কেমন?
ডা. আব্দুর রব: আমরা মোটামুটি সফল- সেটা অবশ্যই বলতে পারি। কারণ আমরা অনেক রোগীকে সুস্থ করতে সক্ষম হয়েছি।
বাংলানিউজ: এখন পর্যন্ত কতজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে? মোট কতজন চিকিৎসা নিয়েছে এবং সুস্থ হয়ে ফিরেছেন?
ডা. আব্দুর রব: এখন পর্যন্ত মোট ১২২ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সর্বমোট ৮০০ জন রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে সাড়ে চারশ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৮০ জনের মতো।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২০
এমএম/এসি/টিসি