শওকত আলীর ছেলে মো. ইমরান মোরশেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, মরদেহ বর্তমানে চট্টগ্রাম সিএমএইচে রয়েছে। রোববার (৫ জুলাই) বাদ জোহর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে দাফন করা হবে।
এর আগে শনিবার (৪ জুলাই) বিকাল পাঁচটা ৫৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম সিএমএইচে মৃত্যুবরণ করেন শওকত আলী বীর প্রতীক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগসহ নানান রোগে ভুগছিলেন।
১৯৬৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করে শওকত আলী ভর্তি হন চট্টগ্রাম কলেজে। ১৯৭০ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মার্চের মাঝামাঝি বাবার কর্মস্থল চট্টগ্রামে আসেন তিনি। বাবা ছিলেন রেলওয়ের চিফ ট্রাফিক ম্যানেজার। চট্টগ্রামে প্রতিরোধপর্বে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একাংশের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যুদ্ধ করেন। ১১ এপ্রিল কালুরঘাটে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি দল তাঁদের আক্রমণ করে। এ সময় সেতুর পশ্চিম প্রান্তে বাম দিকে তিনি ও আরও কয়েকজন গণযোদ্ধা প্রতিরক্ষা অবস্থানে ছিলেন।
এরপর ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে তাঁরা অবস্থান নেন রাঙামাটির নানিয়ারচর থানার বুড়িরহাটে। ১৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো ব্যাটালিয়ন তাঁদের অবস্থানে আক্রমণ করে। সেখানেও তাঁরা দীর্ঘক্ষণ যুদ্ধ করেন। বুড়িরহাট থেকে সরে গিয়ে তাঁরা অবস্থান নেন খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে। ২৭ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল স্থানীয় মিজোদের সঙ্গে নিয়ে তাঁদের ওপর আক্রমণ করে। সেখানেও অলৌকিকভাবে তিনি বেঁচে যান।
শওকত আলী এরপর ভারতে যান। পরে যোগ দেন প্রথম বাংলাদেশ ওয়ারকোর্সে। প্রশিক্ষণ শেষে ১ নম্বর সেক্টরের মনুঘাট সাবসেক্টরে মুক্তিবাহিনীর একটি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে যোগ দেন। ফটিকছড়িতে যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক অফিসারসহ বিপুলসংখ্যক সেনা তাঁদের হাতে নিহত হয়। পরে হেঁয়াকো-নাজিরহাটে তাঁরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে কিছু এলাকা মুক্ত করে সেখানে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। মুক্তিযুদ্ধে সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য শওকত আলীকে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০২০
এসি/টিসি