ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনার ধাক্কা সামলেও প্রবৃদ্ধি চট্টগ্রাম বন্দরের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০২০
করোনার ধাক্কা সামলেও প্রবৃদ্ধি চট্টগ্রাম বন্দরের চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার টার্মিনাল

চট্টগ্রাম: বৈশ্বিক মহামারী করোনার ধাক্কাটা বেশ জোরেই লেগেছিলো দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে। ডেলিভারি কমে যাওয়ায় তীব্র কনটেইনার জট, বহির্নোঙরে জাহাজের জট, ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কায় জেটি জাহাজশূন্য করাসহ অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে আগের অর্থবছরের চেয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ কোটি ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ২৭২ টন কার্গো (পণ্য) হ্যান্ডলিং হয়েছে বন্দরে। এর আগের অর্থবছরে যা ছিলো ৯ কোটি ৮২ লাখ ৪০ হাজার ৬৫৫ টন।

এবার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।

সূত্র জানায়, রোদে পোড়া, বৃষ্টি ও সাগরের ঢেউ থেকে পণ্য বাঁচিয়ে নিরাপদে পরিবহনে কনটেইনারের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে।

বিশ্বের ১০০টি শীর্ষ কনটেইনার হ্যান্ডলিংকারী বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৬৪তম। ৪০ ফুট ও ২০ ফুটের কনটেইনার বক্স আসে বন্দরে। হিসাবের সুবিধার জন্য ৪০ ফুটের কনটেইনারকে ২০ ফুটের দুইটি হিসাব করা হয়।

বন্দর সচিব জানান, সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে এ বন্দর কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে ৩০ লাখ ৪ হাজার ১৪২ টিইইউ’স (২০ ফুট হিসেবে)। আগের অর্থবছরে যা ছিলো ২৯ লাখ ১৯ হাজার ২৩ টিইইইউ’স। এবার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯ শতাংশ।

করোনার কারণে চীন থেকে পণ্য আমদানি, এলসি খোলা, জাহাজ আসায় কিছুটা স্থবিরতা নেমে এসেছিলো কয়েক মাস। তারপরও সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে বন্দর কর্তৃপক্ষ জেটি ও বহির্নোঙর মিলে জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে ৩ হাজার ৭৬৪টি। আগের অর্থবছরে (২০২৮-১৯) যা ছিলো ২ হাজার ৬৯৯টি। এবার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলানিউজকে বলেন, দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে যখন সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে তখনো বন্দর অপারেশনাল কার্যক্রম এক মুহূর্তের জন্যও বন্ধ ছিল না। এর মধ্যে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকা, তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকদের ছুটি দেওয়ায় বন্দর থেকে আমদানি করা কাঁচামালের চালান খালাস একপ্রকার বন্ধ হয়ে পড়েছিল। আমরা দ্রুত সমস্যা চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠালে সরকারের পলিসি সাপোর্ট নিয়ে অফডকে প্রায় সব ধরনের কনটেইনার নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আসে। নিঃসন্দেহে এটা একটা বড় অভিজ্ঞতা।

বন্দরের সাফল্যের জন্য অর্থনৈতিক যোদ্ধা বিশেষ করে বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মেইন লাইন অপারেটর, শিপিং এজেন্ট, টার্মিনাল অপারেটর, বার্থ অপারেটর, শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, বিজিএমইএ, আমদানিকারক, রফতানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট সব স্টেক হোল্ডারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বন্দর চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, জুলাইয়ের শেষনাগাদ পুরোদমে আমদানি-রফতানি শুরু হলে দেশের অর্থনীতির গতি ধীরে ধীরে আগের অবস্থানে চলে আসবে। মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর, বে টার্মিনাল, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) সহ বড় প্রকল্পগুলোর কাজ এগিয়ে চলছে। নতুন নতুন হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংযোজনও অব্যাহত রয়েছে। সব মিলে আগামী দিনে বন্দরের সক্ষমতা ও প্রবৃদ্ধি আশাতীত বাড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ২২১১ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২০
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।