ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনা: উপজেলায় বাড়ছে বিপদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৫ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
করোনা: উপজেলায় বাড়ছে বিপদ বোয়ালখালীর একটি দোকানে ক্রেতাদের ভিড়। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: লকডাউন শিথিল করার পর চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার মধ্যে ১৪টিতে বেড়েছে করোনার সংক্রমণ। শহর থেকে গ্রামমুখী মানুষের কারণে এই সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বর্তমানে গ্রামে আক্রান্তের হার ৩২ শতাংশ।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, উপজেলাগুলোতে রোববার (২৮ জুন) পর্যন্ত ২ হাজার ৪৪৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মোট মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের।

ইতোমধ্যে জেলার হাটহাজারী, আনোয়ারা, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, রাউজান, সীতাকুণ্ড, চন্দনাইশ, পটিয়া ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে রেড জোনে জনচলাচলে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনও কোনও নির্দেশনা জারি করেনি প্রশাসন।

এতে এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় এবং শহরে অবাধে চলাচল করছে মানুষ, নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার গরজও। রেড জোন চিহ্নিত এলাকাগুলো লকডাউনের আওতায় আনা না গেলে সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, গত ২৬ জুন পর্যন্ত সাতকানিয়ায় ১৩৭ জন, লোহাগাড়ায় ১২৬ জন, রাউজানে ১৮৫ জন, হাটহাজারীতে ৪১০ জন, পটিয়ায় ২৭০ জন, বোয়ালখালীতে ২৩০ জন, আনোয়ারায় ৯১ জন, চন্দনাইশে ১৬৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এছাড়া সীতাকুণ্ডে ২৫৫ জন, ফটিকছড়িতে ১২৬ জন, মিরসরাইয়ে ৭৪ জন, সন্দ্বীপে ৩৫ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ১১১ জন, বাঁশখালীতে ১৩৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ২৮ জুন পর্যন্ত এই সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় আড়াই হাজার জনে।

স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বাংলানিউজকে জানান, উপজেলাগুলোতে এখনও চলছে মানুষের জমজমাট আড্ডা। চায়ের দোকান, কাঁচাবাজার, মুদি দোকানসহ অলি-গলিতে রাত অবধি গল্পে মশগুল থাকছে মানুষ। পরিবহন চলাচল শুরু হওয়ায় পর থেকে মানুষের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতও বেড়েছে। বারবার হাত ধোয়া আর মাস্ক ব্যবহারের ব্যাপারেও উদাসীন গ্রামের মানুষ।

গত এপ্রিল মাসেই সাতকানিয়াকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ‘হটস্পট’ হিসেবে বিবেচনায় নেয় প্রশাসন। সেসময় অনির্দিষ্টকালের জন্য উপজেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়। তবে ঈদের আগে লকডাউন শিথিল করা হলে পরবর্তীতে সেখানেও সংক্রমণ বেড়ে যায়।

এছাড়া হাটহাজারী উপজেলাও এখন করোনার হটস্পটে পরিণত হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু সৈয়দ মো. ইমতিয়াজ হোসাইন। তিনি জানান, হাটহাজারীতে সংক্রমণের হার অনেক বেড়ে গেছে। করোনা পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়া অনেক রোগীর কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। উপসর্গ ছাড়াও অনেক করোনা আক্রান্ত রোগী যেখানে সেখানে ঘোরাঘুরি করছে।

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ জানান, সাতকানিয়ার পর সীতাকুণ্ডই হলো করোনার হটস্পট। পৌরসদর ও সলিমপুর ইউনিয়নে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। প্রায় প্রতিদিনই নমুনা পরীক্ষায় এখানে দুই বা তারও বেশি রোগী আক্রান্ত হচ্ছে।

সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউন শিথিল করার পর অফিস, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গার্মেন্টস খুলেছে। মানুষ প্রাত্যহিক কাজে বাইরে যাচ্ছে। শহর ছেড়ে অনেকে এখন গ্রামে যাচ্ছে। সেখানেও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তাই গ্রামে সংক্রমণ বাড়ছে। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
এসি/এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।