ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৪৮ করোনা রোগীর জন্য ২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২০
৪৮ করোনা রোগীর জন্য ২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রেলওয়ে হাসপাতাল

চট্টগ্রাম: রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বক্ষব্যাধি হাসপাতালে মঙ্গলবার (০৯ জুন) পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছেন ৪৮ জন। এই ৪৮ জনের জন্য মাত্র দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের সাপোর্ট আছে হাসপাতালটিতে। করোনা আক্রান্ত রোগীর অবস্থা খারাপ হলে এ দুটি অক্সিজেনের জন্য কাড়াকাড়ি করতে হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, রেলওয়ের এ হাসপাতালটি ১০০ শয্যার জন্য প্রস্তুত রাখা হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো চিকিৎসাসামগ্রী পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমনকি নার্স, ওয়ার্ডবয় ও পরিচ্ছন্নকর্মীসহ ২৩জন কর্মচারীকে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে কোনো সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হয়নি।

তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী) দিয়েছে।

দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকলেও নেই ভেন্টিলেটরসহ অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী।

স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে মাত্র দুজন চিকিৎসক দেওয়া হয়েছে। তারা রোস্টার অনুযায়ী দিনে একবার গিয়ে রোগী দেখে আসেন।

হাসপাতালে থাকা কয়েকজন রোগী বাংলানিউজকে জানান, দিনে মাত্র একবার চিকিৎসক আসেন রোগী দেখতে। চিকিৎসা বলতে এখানে শুধু বেডে শুয়ে রেখে স্যালাইন দেওয়া। আর কারও স্বাসকষ্ট হলে তাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া। এর চেয়ে বাসায় অনেক ভালো।

রেলওয়ের হাসপাতালের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ১০০ শয্যার সম্পূর্ণ প্রস্তুত একটি হাসপাতাল। এরপরও চিকিৎসা সামগ্রী দিতে তাদের এতো কৃপণতা কেন? 

করোনা রোগীর অবস্থা কখন কেমন হয় বলা যায় না, একসঙ্গে অনেকজনের স্বাসকষ্ট হলে এ দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য কাড়াকাড়ি করতে হবে রোগীদের। ’

স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বুক হয়নি কোনো হোটেল

হাসপাতালে করোনা রোগীর দেখাশোনা করার জন্য ৪ জন জুনিয়র নার্স আছেন। আয়া এবং ওয়ার্ডবয় মিলে আছেন ৯ জন, পরিচ্ছন্নকর্মী আছেন ১০ জন। তারা এক সপ্তাহ কাজ করার পর কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার জন্য এখনও কোনো হোটেল বুক দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদফতর। তারা কাজ করার সময় যদি করোনায় সংক্রমিত হন এবং হোটেলে না গিয়ে যদি বাসায় যান তাহলে তাদের পরিবারও ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন বলে জানিয়েছেন পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা (সিএমও) ডা. সামশুল আলম মো. ইমতিয়াজ।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ২৩ জন স্বাস্থ্য কর্মচারী হাসপাতালে কাজ করছেন। তাদের পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী আমরা সরবরাহ করেছি। হাসপাতালে মাত্র দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে, নেই ভেন্টিলেটরসহ অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মৃদু করোনা বা হালকা আক্রান্ত করোনা রোগী বলতে কিছু নেই। করোনা রোগী মানে করোনা রোগী। তাদের কখন কী হয় বলা যায় না।

ডা. সামশুল আলম মো. ইমতিয়াজ বলেন, হাসপাতালে কাজ করা ২৩ জন কর্মচারীর জন্য এখনও হোটেল বুক দেয়নি। তারা কাজ করে বাসায় গেলে তাদের পরিবারও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

বিষয়টি স্বীকার করে চট্টগ্রামের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোস্তফা খালেদ আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, মূলত স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এখনও বরাদ্দ না পাওয়ায় রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রী দেওয়া হয়নি। বরাদ্দ হলে সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০২০
জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad