ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মধুমাসের ফল তাল, চাহিদা বেশি শাঁসের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪১ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২০
মধুমাসের ফল তাল, চাহিদা বেশি শাঁসের বিআরটিএ-স্টেশন রোডের পাশে কাঁচা তাল নিয়ে বসেছেন পাইকারি বিক্রেতারা।

চট্টগ্রাম: ‘ঐ দেখা যায় তাল গাছ, ঐ আমাদের গাঁ, ঐখানেতে বাস করে কানা বগির ছা।’ বকের দেখা কম মিললেও গ্রামে এখনও একপায়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেক তালগাছ। গাছগুলো কচি তালে ভরে গেছে। পাকার আগেই গ্রাম হয়ে তাল এখন শহরের অলিগলিতে মিলছে।

তালের শাঁস খাওয়ার এখনই সময়। একমাত্র এই শাঁসেই এখনও ফরমালিন দেওয়া সম্ভব হয়নি।

গরমে একটু স্বস্তি পেতে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মধুমাসের এই ফল। নগরের বিআরটিএ-স্টেশন রোডের পাশে কাঁচা তাল নিয়ে বসেছেন পাইকারি বিক্রেতারা।

বিআরটিএ-স্টেশন রোডের পাশে কাঁচা তাল নিয়ে বসেছেন পাইকারি বিক্রেতারা। কুমিল্লাসহ দেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কচি তাল খুচরা বিক্রেতারা এখান থেকে ভ্যানে করে নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বিক্রি করেন। এই তাল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে শত শত মানুষ।

নগরীর স্টেশন রোড এলাকার পাইকারি তাল বিক্রেতা মোহাম্মদ রমজান জানান, ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা ও সম্প্রতি বয়ে যাওয়া আম্পানে অনেক তাল গাছ উপড়ে গেছে। তাছাড়া চলতি মৌসুমে তালের ফলনও কম হওয়ায় সর্বত্র তাল শাঁসের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে চড়ামূল্যে এবার তাল বিক্রি হচ্ছে।

বিআরটিএ-স্টেশন রোডের পাশে কাঁচা তাল নিয়ে বসেছেন পাইকারি বিক্রেতারা। বর্তমানে প্রতিটি তালের শাঁস ১০ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করে প্রতিদিন পাঁচশতাধিক টাকা আয় করছেন বলে জানালেন কয়েকজন তাল বিক্রেতা। এছাড়া প্রতি একশ তাল পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৪শ-৫শ টাকা। এবছর অনেক তাল গাছ কেটে ফেলায় তালের সরবরাহ কম বলেও জানান তারা।

বিআরটিএ-স্টেশন রোডের পাশে কাঁচা তাল নিয়ে বসেছেন পাইকারি বিক্রেতারা। গরমে স্বস্তি পেতে পথচারীরা এখন ভিড় করছে তাল বিক্রেতার কাছে। গাড়ি থামিয়ে অনেক ক্রেতা পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে তালের শাঁস। রিকশাচালক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এই মৌসুমী ফল কিনতে ভিড় করছে রাস্তার মোড়ে।

বিআরটিএ-স্টেশন রোডের পাশে কাঁচা তাল নিয়ে বসেছেন পাইকারি বিক্রেতারা। তাল শাঁসের উপকারিতাও অনেক। কচি তালের শাঁস পছন্দ করে না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। তালের আদি নিবাস আফ্রিকা। কেউ কেউ বলেন, এর জন্মস্থান আমাদের উপমহাদেশেই। তবে এর জন্মস্থান যেখানেই হোক, ফলটি আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গেছে।

বিআরটিএ-স্টেশন রোডের পাশে কাঁচা তাল নিয়ে বসেছেন পাইকারি বিক্রেতারা। বারো মাস গাছে তাল ফললেও কচি তালের শাঁস ঠিক এই সময়টিতেই বাজারে আসে। গরমে তালের কচি শাঁস এবং এর ভেতরের মিষ্টি পানি তৃষ্ণা মিটিয়ে শরীর জুড়িয়ে দেয়। তালে রয়েছে প্রতি ১০০ গ্রামে ০.৮ গ্রাম খাদ্যপোযোগী খনিজ পদার্থ, ২০.৭ গ্রাম শর্করা, ০.৮ গ্রাম আমিষ, ০.৫ গ্রাম আঁশ।

পানির অভাব পূরণ করতে এর মধ্যে আছে ৭৭.৫ ভাগ জলীয় অংশ। ০.৫ গ্রাম খাদ্য আঁশ থাকায় এটি হজমে সহায়ক। অবাক করার মতো খাদ্যশক্তি রয়েছে তালের শাঁসে। প্রায় ৮৭ কিলোক্যালোরি, আট মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকায় তালের শাঁস হাড় গঠনেও দারুণ ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২০
এসএস/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।