ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আ.লীগ নেতাদের শেল্টারে শিবির ক্যাডার রিফাতের চাঁদাবাজি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৫ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২০
আ.লীগ নেতাদের শেল্টারে শিবির ক্যাডার রিফাতের চাঁদাবাজি রিফাত কবির

চট্টগ্রাম: দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার রিফাত কবির। বাড়ি সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চৌকিদার বাড়ি এলাকায়। একসময় সাতকানিয়া লোহাগাড়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর দেহরক্ষী ও ক্যাডার হিসেবে এলাকায় ছিল তার দাপট।

দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার পরেও কমেনি তার দাপট। প্রবাসী ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে ফোনে নিয়মিত চাঁদাবাজি করে গেছেন এতোদিন।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার শেল্টারে থেকে এসব অপকর্ম করে আসছিলেন রিফাত কবির। স্থানীয় গ্রুপিং রাজনীতির সুযোগ নিয়ে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা শিবির ক্যাডারদের ব্যবহার করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বুধবার (২৭ মে) চাঁদাবাজির একটি মামলায় রিফাত কবিরকে গ্রেফতার করে সাতকানিয়া থানা পুলিশ। তারপর থেকে কারাগারে রয়েছেন এই শিবির ক্যাডার।

রিফাত কবির সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চৌকিদার বাড়ি এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যার চেষ্টাসহ নানা অপরাধে ১৪টি মামলা রয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানান সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ।

জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর সঙ্গে শিবির ক্যাডার রিফাত কবিররিফাত কবির জামায়াত নেতা শাহাজাহান চৌধুরী কিলার গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড। সাতকানিয়া আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ কাদেরী, হাসানসহ কয়েকজন খুন হয় তার হাতে।

জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর রায়ের পর কাঞ্চনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আসাদের মুরগির ফার্ম ও মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন রিফাত কবির ও তার বাহিনী।

২০১৮ সালে চট্টগ্রাম শহরের কাতালগঞ্জে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফখরুদ্দীন বাবুলকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন রিফাত কবির।

চট্টগ্রামে ব্যবসা করা সাতকানিয়ার বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি ছিল তার আয়ের উৎস। চাঁদার টাকা না দিলে সাতকানিয়া বাড়িতে হামলার হুমকিও দিতেন। তার ভয়ে অনেক ব্যবসায়ী নিরবে চাঁদার টাকা দিয়ে গেছেন।

গত ২৭ মে কাঞ্চনা এলাকায় আবুল কালাম নামে এক ব্যক্তির কাছ ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে রিফাত কবির। সেই টাকা নিতে এসে স্থানীয়দের হাতে আটক হন। পরে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে তাকে।

পুলিশ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, রিফাত কবিরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ নানা অপরাধে মামলা রয়েছে। যারা তাকে শেল্টার দিয়েছে তা তার পেছনে শক্তি হিসেবে যারা কাজ করেছে তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হোসাইন কবিরের বাড়ি সাতকানিয়ার কাঞ্চনায়।

হোসাইন কবির বাংলানিউজকে বলেন, রিফাত কবিরকে আমি কখনও দেখিনি। তার নাম শুনেছি। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের খুনের অভিযোগ রয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুদ্দীন বাবলু বাংলানিউজকে বলেন, দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার রিফাত কবিরকে আমাদের দলের কিছু নেতা আশ্রয় দেয়। না হয় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় তারপরও সে কীভাবে চাঁদাবাজি করে!

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২০
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।