ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কাস্টম হাউসে করোনার থাবা, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২০
কাস্টম হাউসে করোনার থাবা, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতের দাবি ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: দেশের সবচেয়ে বড় রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে করোনার থাবায় উদ্বেগ বাড়ছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। এ পর্যন্ত ১২ জন কর্মকর্তা, ১ জন কর্মচারীর করোনা শনাক্ত হয়েছে।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা, সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ মারা গেছেন ৫ জন সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের মালিক।

সূত্র জানায়, কাস্টম হাউসের করোনা আক্রান্ত রাজস্ব কর্মকর্তারা (আরও) হলেন- ৮(ডি) শাখার আমজাদ হোসেন হাজারী, অফডকের জসিম উদ্দিন মজুমদার, রেহানা আক্তার, মো. জাফর উল্ল্যাহ, আনস্টাফিংয়ের নুরুল মোস্তফা ও সেকশন-৪ এর মো. আল আহসান হাবীব।

 

সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা (এআরও) হলেন- অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার মো. ফারুক আবদুল্লাহ, নারাশিকো ও মো. জহিরুল ইসলাম, জেটি (আনস্টাফিং) কপিল দেব গোস্বামী ও সেকশন ৫(এ) এর জামিল সরোয়ার, আনস্টাফিং শাখার সুজন কুমার সরকার। আক্রান্ত হয়েছেন এআইআর শাখার কম্পিউটার অপারেটর শেখ মেহেদী হাসানও।

কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার সহকারী কমিশনার নূর এ হাসনা অনসূয়া জানান, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ কাস্টমস ও ভ্যাটের মোট ২১ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ১৩ জন, ঢাকা কাস্টম হাউসে ৩ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, কমলাপুর আইসিডিতে ২ জন রাজস্ব কর্মকর্তা ও ১ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ভ্যাট সার্কেলে ১ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, ঢাকা উত্তর ভ্যাট সার্কেলে ১ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট সার্কেলে ১ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রয়েছেন।  

চট্টগ্রাম কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বাংলানিউজকে বলেন, ইতিমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে আমাদের ৫ জন সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের মালিক মারা গেছেন। এর মধ্যে অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা পান্না লাল সেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাজহারুল ইসলাম চৌধুরীও রয়েছেন। এ ছাড়া অনেক সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছ্নে।

তিনি বলেন, কাস্টম হাউসের কমিশনারকে আমরা জানিয়েছি বিল অব এন্ট্রি সিরিয়ালি জমা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। এটি হলে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত হবে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কর্মীদের। উনি নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন। বর্তমানে আমাদের লং রুমে (হল রুম) যেখানে অ্যাসেসমেন্ট হয় সেখানে কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হলেও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মীরা জানালার সামনে ভিড় করে থাকছেন বাধ্য হয়ে।

এ ছাড়া বন্দরের ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টারে যেখানে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মীদের সবচেয়ে বেশি পদচারণা সেখানে বন্দরের একজন কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কয়েকজন আক্রান্তও হয়েছেন। সব মিলে দেশের জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে যখন সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে তখন থেকেই সিঅ্যান্ডএফ কর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। আমাদের দাবি কাস্টম হাউস, বন্দরের ওয়ান স্টপ সার্ভিসসহ সব জায়গায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের কাজটি কঠোরভাবে নজরদারি করা। যোগ করেন কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু।  

বৃহস্পতিবার (২৮ মে পর্যন্ত) চট্টগ্রামে মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৪২৯ জন। এছাড়া মৃত্যুবরণ করেছে ৬৭ জন, হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ১৯৭ জন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবারই চট্টগ্রামে ৪৫৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ২২৯ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বিআইটিআইডিতে ৮৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৬ জন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২৪৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩৯ জন এবং সিভাসুতে ১০৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪২ জনের কোভিড-১৯ সংক্রমণ পাওয়া যায়। এছাড়া কক্সবাজার ল্যাবে করোনা পরীক্ষায় ১২ জনের করোনা পাওয়া যায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২০
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।