পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালীর ছনুয়ায় ১ হাজার ৯৭০ মিটার, গন্ডামারায় ১ হাজার ২৬০ মিটার, খানখানাবাদ ও কদমরসুল এলাকায় ৬০ মিটার, নদী অংশে রাতাখোর্দ্দ এলাকায় ১৫০ মিটার, বৈলগাঁওয়ে ২৯ মিটার এলাকায় মাটির বাঁধ ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া আনোয়ারার ১ হাজার ৩১০ মিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ২১৫০ মিটার অরক্ষিত থাকায় রায়পুর ইউনিয়নের ধলঘাট, গহিরা, ঘাটকুল ও বার আউলিয়া ও রায়পুর গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে ডুবে গেছে।
আনোয়ারার রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান জানে আলম জানান, গত তিন বছরেও এই বেড়িবাঁধের কাজ শেষ করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জানা যায়, আনোয়ারায় ২০১৬ সালে পাউবোর অধীনে ৩২০ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে পোল্ডার নম্বর-৬২ (পতেঙ্গা), ৬৩/১ এ (আনোয়ারা) এবং ৬৩/১বি (আনোয়ারা ও পটিয়া) উপকূলে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের আওতায় বাঁধ, ডাইক পুনরাকৃতিকরণ, মেরামত ও উচ্চতা উন্নীতকরণ ৬৪.৩২৯ কিলোমিটার, নদী তীর, সী-ডাইক সংরক্ষণ ৯.৫৫ কিলোমিটার, ডাইক স্লোপ প্রটেকশন ০.৭০০ কিলোমিটার, তীর সংরক্ষণ মেরামত কাজ ১.৩৯৩ কিলোমিটার, পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো মেরামত ও পুনর্বাসন ২৪টি, পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ ১১টি, খাল পুনঃখনন ১৪.৬৯০ কিলোমিটার, অ্যাপ্রোচ বাঁধ ও ক্লোজার নির্মাণ (খাল ৮ টি), ০.৩১০ কিলোমিটার, ক্লোজার নির্মাণ ০.১২০ কিলোমিটার, ভূমি অধিগ্রহণ ৫.০০ হেক্টর, ড্রেজিং ২.৪০০ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হলেও প্রকল্পের বাইরে থাকা ২ হাজার ১৫০ মিটার বাঁধ অরক্ষিত রয়ে গেছে।
অপরদিকে বাঁশখালীতে ২০১৫ সালে উপকূল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয় । উপজেলার পাউবো পোল্ডার নম্বর- ৬৪/১এ, ৬৪/১বি এবং ৬৪/১সি ঘিরে বাঁধের সী ডাইক সংরক্ষণসহ ব্রীচ ক্লোজিং ও পুনরাকৃত্তিকরণ ৬.২৯৬ কিলোমিটার, নদী তীর সংরক্ষণ কাজ ৩.৮৪৮ কিলোমিটার, বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ ৫.৬০৪ কিলোমিটার, বাঁধ নির্মাণে ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে বাঁধের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হলেও এখনো ৩ হাজার ৪৬৯ মিটার বাঁধ অরক্ষিত রয়েছে।
বাঁশখালীর ছনুয়া ইউপি চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ জানান, ছনুয়ায় প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাটির বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। দ্রুত বাঁধ নির্মাণ না হলে ভবিষ্যতে অনেক এলাকা বিলীন হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে নতুন করে বাঁধের কোনো অংশের ক্ষতি হয়নি। বারআউলিয়া এলাকা দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। দেড় কিলোমিটার ওই বাঁধের কাজের জন্য ২০১৬ সালে একনেকে ৬৫ কোটি টাকা অনুমোদন হয়। টেন্ডার শেষে প্রকল্পের নকশা ও অ্যালাইনমেন্টে পরিবর্তন এনে তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। অনুমোদন পেতে দেরি হওয়ায় কাজ শেষ করা যায়নি। বর্তমানে ৩২০ কোটি টাকার কাজ চলছে, তার সঙ্গে আরও ২ হাজার ১৫০ মিটার কাজের জন্য ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী ধীমান চৌধুরী বলেন, বাঁশখালীতে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ এখনও শেষ হয়নি। উপকূলের বিভিন্ন ইউনিয়নে ৩ হাজার ৪৬৯ মিটার এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করা হবে। উপকূলের অনেক জায়গায় বাঁধের কারণে লোকালয়ে পানি ঢুকতে পারেনি। তবে কয়েকটি স্থানে মাটির বাঁধ ভেঙ্গে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২০
এসি/টিসি