ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ছয় করোনা আক্রান্তের মরদেহ দাফন করেছে আল মানাহিল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৪ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২০
ছয় করোনা আক্রান্তের মরদেহ দাফন করেছে আল মানাহিল আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের সদস্যরা।

চট্টগ্রাম: চার-পাঁচজন তরুণ। সবার পরনে নতুন সাদা পিপিই, গ্লাভস, চশমা। অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা, নামানোর পর জানাজা শেষে পরম যত্নে কবরে শুইয়ে দিচ্ছেন মরদেহ। স্বজন, সন্তানরা প্রিয়জনের শেষযাত্রা দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখছেন।

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মানুষদের কবর দেওয়ার দৃশ্যটা এমনই। চট্টগ্রামের ৬ জন করোনা রোগীর মরদেহ দাফন করেছে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।

বুধবার (৬ মে) নগরের পাহাড়তলী এলাকায় ষষ্ঠ মরদেহ দাফন করেন সংস্থার কর্মীরা। আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

দাফন ছাড়াও অর্ধশতাধিক করোনা পজেটিভ রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে আনা-নেওয়ার কাজটিও করেছেন তারা।

গত বুধবার (১৫ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে দেখা করে আল মানাহিলের কর্মকর্তারা চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়ে বা করোনা সন্দেহে কেউ মারা গেলে মৃতের কবর খনন এবং জানাজাসহ দাফনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে প্রস্তুত থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

তারা জানান, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা হবে। তাদের যথেষ্ট পিপিই আছে। নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই কাজটি করবেন তারা।

আল মানাহিলের প্রধান সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে আমাদের জানানো হলে আমরা করোনা রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্স সেবা কিংবা করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের দাফন-কাফন করে থাকি। আমাদের তিনটি অ্যাম্বুল্যান্স ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত। আমাদের ৪৫ জন কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী করোনাভাইরাসের শুরু থেকে সেবা দিয়ে আসছেন। আল্লাহর রহমতে এখনো কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি।

তিনি জানান, নানুপুর মাদ্রাসার মাওলানা শাহ জমির উদ্দিন (র.) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে আনা-নেওয়া, দাফন-কাফন ছাড়াও নগরে পথচারী ও সুবিধাবঞ্চিতদের রান্না করা ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছে আল মানাহিল।

কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী ও তার পরিবারের সঙ্গে বিরূপ আচরণ না করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, কাল আপনি আমি যেকেউ আক্রান্ত হতে পারি। সাহায্য করতে না পারুন অন্তত তাদের মরদেহ দাফনে বাধা কিংবা তাদের পরিবারকে নিগৃহীত করবেন না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যবিধি ও করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার সুরক্ষা নির্দেশনাগুলো মেনে চলুন। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করুন।

চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪০ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ১২ জন।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২০
এআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।