ঢাকা, সোমবার, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২, ০৭ জুলাই ২০২৫, ১১ মহররম ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনা: বন্ধ চেম্বার, জরুরি না হলে সেবা দিতে নারাজ হাসপাতাল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:২৫, এপ্রিল ১, ২০২০
করোনা: বন্ধ চেম্বার, জরুরি না হলে সেবা দিতে নারাজ হাসপাতাল চট্টগ্রামে হাসপাতাল, ক্লিনিকেও সুনসান নীরবতা। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: পঞ্চাশোর্ধ্ব একব্যক্তি শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন নগরের শেভরণ হাসপাতালে। চেম্বারে ডাক্তার দেখাবেন। কিন্তু চেম্বার বন্ধ তাই ডাক্তার দেখাতে পারলেন না তিনি। ছুটে গেলেন অন্য একটি হাসপাতালে সেখানেও একই অবস্থা।

শুধু শেভরণ নয়, সিএসসিআর, মেডিক্যাল সেন্টার, ম্যাক্স কিংবা মেট্রোপলিটন হাসপাতাল প্রায় প্রতিটি হাসপাতালেই চেম্বারে রোগী দেখা বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় ফ্লু এবং শ্বাসকষ্টজনিত কোনো রোগী আসলেই চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করছে এসব হাসপাতাল।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন ফ্লুজনিত রোগী তেমন একটা নেই। তা ছাড়া এ ধরনের কোনো রোগী আসলে সরকার নির্ধারিত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি প্রাইভেট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক পুলক পারিয়াল বাংলানিউজকে বলেন, দায়িত্বরত ডাক্তার যারা আছেন তারা রোগীদের কাউন্সেলিং করছেন। এমন কোনো রোগী আসলে আমরা সরকার নির্ধারিত যেসব হাসপাতাল রয়েছে সেখানে পাঠিয়ে দিচ্ছি। তা ছাড়া কয়েকদিন যাবত রোগীর সংখ্যাও কমে এসেছে। আগে যেখানে তিন থেকে চারশ রোগী থাকত সেখানে প্রতিদিন একশ জনও নেই।

রোগী নিয়ে নগরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা নিলুফার জাহান বাংলানিউজকে বলেন, আমার মাকে নিয়ে এসেছি ডাক্তার দেখাতে। কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। এসে দেখছি ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ। আরেক ডাক্তারের কাছে দেখানোর জন্য গেলাম। ডাক্তার রোগ সম্পর্কে জানার পর রোগী দেখতে চাচ্ছেন না।

এদিকে কোনো হাসপাতাল চিকিৎসা না দিলে মুঠোফোনে জানানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ফোন নাম্বার দিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী।

এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে দুটি ফোন পেয়েছি। তবে ঘটনাগুলো বেশ পুরনো। সম্প্রতি কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। সব হাসপাতালে রোগী দেখা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে রোগীর সংখ্যাও কমে গেছে। তা ছাড়া রোগীদের সুবিধার জন্য টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছি। সেখানেও পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।

এদিকে চট্টগ্রাম বেসরকারি হাসপাতাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. লিয়াকত আলী খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘অসুখ নিয়ে মানুষ যেমন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, ঠিক তেমনি চিকিৎসকরাও পেনিক হয়ে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছিলেন। কিন্তু এখন তা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তা ছাড়া সব বেসরকারি হাসপাতাল তাদের চিকিৎসাসেবা চালু রেখেছে।

তিনি আরও বলেন, ফ্লু জনিত রোগী নিয়ে চিকিৎসকদের বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ (পিপিই) পাওয়ার পর এখন তারা সব ধরনের রোগী দেখছেন। সাধারণ রোগীদের আমরা নিরুৎসাহিত করছি। যাতে তারা এখন চিকিৎসা না নেন। দেশের এ পরিস্থিতিতে একান্ত জরুরি না হলে আমরা রোগী ভর্তি করাতে চাইছি না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২০
এমএম/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।