ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কেউ পেটের দায়ে নেমেছে সড়কে, কোথাও শখের আড্ডা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২০
কেউ পেটের দায়ে নেমেছে সড়কে, কোথাও শখের আড্ডা! পেটের দায়ে রিকশা নিয়ে রাজপথে নেমেছেন অনেকে।

চট্টগ্রাম: মঙ্গলবার দুপুর ১২টা। কাজীর দেউড়ি মোড়। সড়কজুড়ে পড়ে আছে ঝরা পাতা, আর সারিবদ্ধ রিকশা। দূর থেকে কেউ আসতে দেখলে তার কাছে যাচ্ছেন তারা। দামাদামি নয়, যেখানে যেতে চান সেখানে নিয়ে যাচ্ছেন রিকশাচালকরা। বিনিময়ে যাত্রী যা দেন, তাই নিচ্ছেন।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে সরকারের পক্ষ থেকে  ঘরে থাকার নির্দেশনা আসার পর দুই দিন বের হননি। এ দুই দিন সংসার কোনোরকম চললেও, বাধ্য হয়ে তৃতীয় দিন থেকে রিকশা নিয়ে বের হন তারা।

কারণ স্ত্রী-সন্তানরা যে না খেয়ে আছেন!

আগে যেখানে তাদের দৈনিক আয় ৮০০ টাকা ছিলো। সড়কে যাত্রী না থাকায়, এখন আয় তাদের সর্বোচ্চ ২০০ টাকা।

সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মাত্র ৫০টাকা আয় হয়েছে বলে জানান মো. জহির নামে এক রিকশাচালক।

জহিরের বাড়ি কুমিল্লা হলেও এখানে থাকেন আগ্রাবাদ ব্যাংক কলোনি এলাকায়। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আর কয়দিন বাসায় থাকবো! স্ত্রী সন্তানরা-তো না খেয়ে আছে, তাই বাধ্য হয়ে বের হয়েছি।

অলিগলিতে জমজমাট আড্ডা।  ছবি: বাংলানিউজতিনি বলেন, ত্রাণ আমরা পাচ্ছি না। যারা ত্রাণ পান তারা সিলেক্টেড। আগ্রাবাদ ব্যাংক কলোনিতে যারা ত্রাণ পাচ্ছেন তারা চলার মতো অবস্থায় আছে। আমরা খেটে-খাওয়া মানুষজন পাচ্ছি না।

মো. আনিছ নামে আরেকজন রিকশাচালক বাংলানিউজকে বলেন, মতিঝর্ণা এলাকায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকি। কয়েকদিন-তো ঘরেই ছিলাম, সরকারি-বেসরকারি কোনো পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত সাহায্য পেলাম না। প্রথম দিন যখন বের হয়েছি তখন আইনশৃঙ্খলাবাহিনী নিষেধ করলেও এখন করে না। কারণ তারা বুঝছে, আমরা রিকশা না চলালে না খেয়ে থাকতে হবে।  

অলিতে-গলিতে আড্ডা

নগরের বড় বড় মোড়ে মানুষ কম হলেও বিভিন্ন অলিতে-গলিতে কিশোর ও যুবকদের আড্ডা দিতে দেখা গেছে। বিশেষ করে জিইসি মোড়ের বাটাগলি, লাভলেন, আসকারদীঘির পাড়, কাঁচাবাজার, বড়মিয়া মসজিদ ও বহদ্দারহাট আবাসিক এলাকায় এ চিত্র বেশি।

সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না অনেক অলিগলির বাজারে।  ছবি: বাংলানিউজজানা গেছে, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর টহল সাধারণত বড় বড় সড়কগুলোতে। এ সুযোগে অলিতে-গলিতে আড্ডায় মেতে উঠছেন তারা।

বাসায় না থেকে আড্ডার বিষয়ে জানতে চাইলে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) আমেনা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি নজরে রেখেছি। প্রয়োজন হলে টহল বাড়ানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২০
জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।