সোমবার (৩০ মার্চ) নগরের টাইগারপাসে চসিকের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে পৃথক পৃথক বৈঠকে মেয়র এ আহ্বান জানান।
তিনি যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্কতা ও সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশেও এসেছে। যেহেতু করোনা ভাইরাসের এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষেধক তৈরি হয়নি, তাই এটি প্রতিরোধে জনসচেতনার বিকল্প নেই। জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ইতিমধ্যে মাইকিং, বিজ্ঞপ্তি প্রচার, লিফলেট বিতরণ, জীবাণুনাশক পানি ছিটানো, কন্ট্রোল রুম স্থাপন, জরুরি প্রয়োজনে চসিকের হাসপাতাল প্রস্তুতরাখাসহ বিভিন্ন সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমি নগরবাসীসহ সবাইকে করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন ও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
এ সময় মেয়র করোনার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে কাউন্সিলরদের দিকনির্দেশনা দিয়ে বলেন, এখন দেশের এ মহামারী অবস্থায় আপনারা যার যার অবস্থান থেকে নগরবাসীর সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখুন। সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যারা আপনাদের এলাকায় হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন তাদের বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখবেন। তাদের প্রয়োজন মেটাতে আপনাদের সবটুকু উজাড় করে দিতে হবে। দেশের এ মহামারীতে কিছু অসাধু ব্যক্তি নানা রকম গুজব ও বিভ্রান্ত তথ্য দিয়ে জনগণকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এরকম কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের নজরে আনতে হবে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে সরকার চসিককে চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। যা আপনাদের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। এই ভোগ্যপণ্যগুলো যাতে সঠিক ও অসচ্ছল মানুষের হাতে যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি সেল রয়েছে। এ সেলগুলো কে কী কাজ করছে তা সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করছে। যা আগামীতে অনেকের কর্মফল নির্ধারণ করবে।
এ করোনা ভাইরাসের কারণে নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষের দুঃখ লাঘবে বিত্তশালীদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান মেয়র।
এলআইইউপিসি’র উদ্যোগে নগরের ২৪টি ওয়ার্ডের অসচ্ছল ব্যক্তিদের অনুদান দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, চসিকের এ প্রকল্পটি নগরীর ২৪টি ওয়ার্ডের ৩৮৪টি স্পটে হাত ধোয়ার পয়েন্ট স্থাপন করবে। এ পয়েন্টগুলোতে থাকবে প্রতিদিন ২টি করে সাবান, পানির ট্যাংক ও বালতি। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৭৫ হাজার উপকারভোগীকে সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইটাইজার দেওয়া হবে।
সভায় মেয়র নগরবাসীর যোগাযোগের সুবিধার্থে চসিকের হট লাইন পুনরায় চালু করার কথা উল্লেখ করে বলেন, এ হটলাইন (১৬১০৪) নাম্বারটি আজ থেকে সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। এ ছাড়া দামপাড়ার কন্ট্রোল রুমের (০৩১-৬৩০৭৩৯ ও ০৩১-৬৩৩৬৪৯) এবং সর্দি, কাশি ও জ্বর সংক্রান্ত বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শের জন্য ৬৩৪৫৮৪ নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।
এ সময় প্যানেল মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, সচিব মো. আবু শাহেদ চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জীবাণুনাশক পানি ছিটানো অব্যাহত: করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আজ ষষ্ঠ দিনের মতো নগরের পোর্ট কানেকটিং রোড, দেওয়ানহাট থেকে বারিক বিল্ডিং, দুই নম্বর গেট থেকে বহদ্দারহাট, সাগরিকা মোড় থেকে সাগরিকা স্টেডিয়াম পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার লিটার জীবাণুনাশক পানি ছিটিয়েছে চসিক। মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সকাল ১১টায় চসিক কনফারেন্স হলে ২৯-৪১ নম্বর কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২০
এআর/টিসি