কিন্তু একশ্রেণির মানুষ এই ত্রাণ নিয়ে করছে ব্যবসা, নগদ টাকার বিনিময়ে একেকটি ত্রাণের বস্তা দুই-তিনজনের হাতবদল হচ্ছে। বাংলানিউজের অনুসন্ধানে গত তিনদিন নগরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়ে দেখা গেছে এই চিত্র।
ত্রাণ বিক্রেতারা বলছেন, নগদ টাকা নেই- তাই চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিক্রি করে দিচ্ছেন তারা। এ অবস্থায় প্রকৃত দরিদ্রদের অনেকে ত্রাণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
নগরের আন্দরকিল্লা মোড়ে রোববার (২৯ মার্চ) বিকেল ৫টায় ব্যক্তি উদ্যোগে দেওয়া হয় ত্রাণের বস্তা। গাড়ি থেকে তিনটি বাজারের ব্যাগভর্তি ত্রাণ ফেলতেই ছোঁ মেরে নিয়ে নেন চারজন লোক। একটু সরে গিয়ে তিন বস্তা ত্রাণ তারা বিক্রি করে দেন দুজনের কাছে। জেএমসেন হল মোড়ে এসে সেই ত্রাণ বিক্রি করে দেওয়া হয় নগদ ৮শ টাকায়।
সর্বশেষ ত্রাণ বিক্রয়কারী ব্যক্তি জসিম মিয়া জানান, তার বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি ভ্যানগাড়ি চালান। বাড়িতে যাওয়ার জন্য এই ত্রাণ বিক্রি করে দিয়েছেন।
তার পাশে থাকা এক নারী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, অনেক দৌড়াদৌড়ি করেও কিছুই পেলাম না, আর ওরা নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে।
একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে নগরের নন্দনকানন, নিউমার্কেট, আলকরণ, জিইসি, ষোলশহর ও অক্সিজেন এলাকায়। প্রতিদিনই ত্রাণ ও অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার দরিদ্রদের। তাদের সেই ত্রাণ নিয়ে চলছে নগদ টাকার লেনদেন।
দেওয়ানবাজার এলাকার বাসিন্দা ওমর আলী রনি বাংলানিউজকে বলেন, দানশীল ব্যক্তিদের দেওয়া ত্রাণ অসহায় মানুষ পাওয়ার আগে নিয়ে নিচ্ছে দরিদ্র সেজে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো একশ্রেণির প্রতারক। তারা এসব ত্রাণ নিয়ে নগদ টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছে।
ষোলশহর এলাকার ব্যবসায়ী জামাল উদ্দীন বলেন, গাড়ি নিয়ে দুইদিন এলাকায় কিছু ত্রাণ বিতরণ করেছি। দরিদ্র মানুষ দেখেই ত্রাণ দিয়েছি।
হোটেল দি এলিনা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবেল সাহা বলেন, ত্রাণ নিয়ে এ ধরনের সমস্যা আগেও দেখেছি। তাই করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নগরীতে কর্মহীন হয়ে পরা শ্রমজীবী ও অসহায় মানুষের মাঝে আমরা কয়েকদিন ধরে তৈরি খাবার বিতরণ করছি। খাবার বিতরণে পুলিশের সাহায্য নিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২০
এসি/টিসি