ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনা ঝুঁকিতে রেয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২০
করোনা ঝুঁকিতে রেয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ীরা অপরিচ্ছন্ন রেয়াজউদ্দিন বাজার।

চট্টগ্রাম: ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৮০টি মার্কেটের অবস্থান চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যকেন্দ্র রেয়াজউদ্দিন বাজারে। এখানকার চৈতন্য গলিতে ১৫০টিরও অধিক কাঁচামালের আড়ত রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শাক সবজি নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা।

করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে জনসমাগম কিছুটা কমে এলেও চলছে ট্রাক থেকে সবজি খালাসের কাজ। রাতে আসা ট্রাক থেকে এসব সবজি গুদামে নিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা।

সারিবদ্ধ দোকান আর গুদামে ঠাসা সরু গলিতে দিনের আলো ঠিকমতো পৌঁছায় না কোথাও কোথাও। এরমাঝে আছে রেস্টুরেন্ট ও আবাসিক কক্ষ।

ব্যস্ততম চৈতন্য গলিতে প্রতিদিন কোটি টাকার বাণিজ্য হলেও পরিবেশ একেবারেই নোংরা। শাক সবজির উচ্ছিষ্টাংশ গলির রাস্তার ওপর ফেলে রাখার কারণে তা পচে নোংরা ও দুর্গন্ধময় পরিবেশ তৈরি হয়। তিনপোলের মাথা থেকে চৈতন্য গলির প্রবেশমুখের অংশে সবসময় থাকে আবর্জনা।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখনও ট্রাকভর্তি কাঁচা শাক সবজি নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। দিনের বেলায় এখানে ভিড় না থাকলেও রাতে সরগরম থাকে গলি। রেয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মঈন উদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক শিবলীর উদ্যোগে করোনারোধে জনসমাগম এড়াতে দুয়েকবার মাইকিং করেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে।

ট্রাক থেকে আড়তে নেওয়া হচ্ছে সবজি। স্থানীয় বাসিন্দা সায়েম চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, এমনিতেই সর্বত্র চলছে করোনা আতঙ্ক। কিন্তু চৈতন্যগলিতে তার প্রভাব পড়েনি ছিটেফোঁটাও। দিনের চাইতে রাতের চিত্র আরও ভয়াবহ। শ্রমিকদের মধ্যে নেই সচেতনতা। মাস্ক ব্যবহার করছেন না আড়তদার-শ্রমিকরা। রাস্তায় পড়ে থাকা শাক সবজির উচ্ছিষ্ট পরিষ্কার করা কিংবা জীবাণুনাশক ছিটানোর উদ্যোগও নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানও চোখে পড়েনি।

ব্যবসায়ীরা জানান, রেয়াজউদ্দিন বাজার আলকরণ ও এনায়েত বাজার ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী স্থানে হওয়ায় এখানকার পরিবেশের উন্নয়ন নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। বিআরটিসি থেকে শুরু করে তিন পোলের মাথা পর্যন্ত চৈতন্য গলিতে প্রতিদিন রাতে শতাধিক গাড়ি প্রবেশ করে। এসব গাড়ির পণ্য খালাসের পর উচ্ছিষ্ট গলিতে ফেলে গাড়ি পরিষ্কার করা হয়। পর্যাপ্ত ডাস্টবিনও নেই।

সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই চৈতন্য গলিতে ট্রাক থেকে নামানো হচ্ছে সবজি। তবে চসিক পরিচ্ছন্নতা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা নিয়মিত ওই এলাকার আবর্জনা পরিষ্কার করে। খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতা যারা রেয়াজউদ্দিন বাজারে যাচ্ছেন, তাদের জনসমাগম এড়িয়ে চলতে ও মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে।

নোংরা ব্যাংক নোট থেকে করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে বলে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এছাড়া বাজার থেকে নিয়ে আসা সবজি বেশ কিছু সময় ঘরের কোণে রেখে দেওয়া এবং পলিথিন ডাস্টবিনে ফেলা, সবজি ভালোভাবে সেদ্ধ করে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

শতাব্দীর বেশি সময় ধরে প্রসারিত হওয়া রেয়াজউদ্দিন বাজার গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। ফলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বড় বিপর্যয় নেমে আসবে বলে স্বীকার করছেন ব্যবসায়ী নেতারাও।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২০
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।