ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনাকালে চট্টগ্রামে ঘরভাড়া মওকুফের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
করোনাকালে চট্টগ্রামে ঘরভাড়া মওকুফের দাবি ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘর থেকে বাইরে আসছেন না মানুষ। হঠাৎ আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার শ্রমজীবীদের দুশ্চিন্তাটাই বেশি। এছাড়া বেসরকারি চাকুরিজীবীরাও আছেন মাস শেষে ঘর ভাড়া দেওয়ার ভয়ে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জরিপ মতে, নগরীতে বসবাসরতদের মধ্যে ৯০ শতাংশই ভাড়াটিয়া। জীবিকার তাগিদে থাকতে হয় ভাড়া বাসায়, থাকেন শিক্ষার্থীরাও।

এমনিতেই বছর শেষে দিতে হয় বাড়তি ভাড়া। তার ওপর বর্তমান পরিস্থিতিতে কর্মক্ষেত্রে যেতে না পারা, শিক্ষার্থীদের টিউশনি, কোচিং ক্লাস বন্ধ থাকায় আয়ের উৎস থেমে গেছে।

করোনার কারণে ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে চলতি মার্চ মাসের ভাড়া না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে কক্সবাজারের সাংবাদিক ও সুজনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সব মহলের প্রশংসা পেয়েছেন। ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় কয়েকজন বাড়ির মালিক এক বা দুই মাস বাসা ভাড়া না নেওয়ার ঘোষণা দেন।

চট্টগ্রামের সাংবাদিক নাসির উদ্দিন হায়দার বলেন, করোনার কারণে গোটা দেশ একধরনের অবরুদ্ধ। বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো কর্মীদের বিনা বেতনে ছুটি দিয়েছে। দোকানপাট, শপিং মল বন্ধ হয়ে গেছে, সেখানে যারা চাকরি করেন তারা বেতন পাওয়ার আশা কম। যারা দিনমজুরি করেন তাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। তাহলে তারা বাসা ভাড়া কোথা থেকে দেবে?

তিনি বলেন, যারা বাড়ি ভাড়া দিয়ে সংসার চালায় তাদের বিষয়টা ভিন্ন। কিন্তু এই দেশে এমন বাড়িওয়ালা কত শতাংশ? ৫ তলা-১০ তলা বাড়ি যাদের আছে তাদের কি বাড়ি ভাড়া লাখের কম আসে? আর আমি অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার কথা বলছি। যে বাড়ির মালিক মাসে ৬০ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া পায়, তিনি না হয় এক মাস ৩০ হাজার টাকা দিয়ে চলবেন, তাতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যাদের হুট করে চাকরি চলে গেল, বেতন বন্ধ হয়ে গেল তারা এই দুঃসময়ে বাড়ি ভাড়া কোথা থেকে দেবেন?

নগরের পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা সায়মন হোসেন পেশায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দুই কক্ষের বাসা ভাড়া দিতে হয় ৯ হাজার টাকা। তার বাইরে বিদ্যুৎ বিল। ভাড়া বাসায় নানা ধরনের সমস্যা থাকলেও সব হজম করছি, আগামী বছর দুই হাজার টাকা বাড়ানোর কথা বলেছেন মালিক। বাড়িওয়ালার সঙ্গে বাড়ি ভাড়া  নিয়ে কথাও বলা যায় না। এখন করোনাভাইরাসের কারণে বাসায় অলস সময় কাটাচ্ছি। বেতন পাওয়া নিয়ে আছি অনিশ্চয়তায়। মালিক যদি ভাড়া মওকুফ করে দেন, তাহলে আমার মতো দরিদ্ররা উপকৃত হতো।  

ভাড়া মওকুফের সরকারি নির্দেশনা চেয়েছেন চট্টগ্রামের ভাড়াটিয়ারা। তারা বলছেন, সংকটকালীন এই সময়ে সরকারের নির্দেশনা পেলে মালিকরা ভাড়া মওকুফ করতে বাধ্য হবেন।

এদিকে এমন পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের ভাড়াটিয়াদের বাসাভাড়া, দোকানভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিলসহ সব ধরনের ইউটিলিটি বিল মওকুফের দাবি জানিয়েছে ভাড়াটিয়া পরিষদ। ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি মো. বাহারানে সুলতান বাহার ও সাধারণ সম্পাদক খাতুনে জান্নাত ফাতেমা খানম যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।