ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

করোনায় ‘গৃহবন্দি’ মানুষের পাশে সেবা নিয়ে পুলিশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২০
করোনায় ‘গৃহবন্দি’ মানুষের পাশে সেবা নিয়ে পুলিশ ‘গৃহবন্দি’ মানুষের পাশে সেবা নিয়ে পুলিশ

চট্টগ্রাম: বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে পুলিশ। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী জনসমাগম রোধে কাজ করছে নগরের বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যরা।

করোনার কারণে যখন মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না তখন কয়েকটি থানার পুলিশ সদস্যরা মানুষের জরুরি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন।

করোনা সংক্রমণ রোধে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমানের নির্দেশে গৃহীত নানা উদ্যোগের মধ্যে এটি একটি।

গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার কাজও করছে পুলিশ।

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া ও কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন ঘোষণা দেন, প্রয়োজনে জরুরি জিনিসপত্র ও ওষুধ সামগ্রী মানুষের বাসায় পৌঁছে দেবেন তারা।

পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, করোনার কারণে মানুষ বাসায় অবস্থান করছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের না হতে প্রশাসনের নির্দেশনা রয়েছে। ওষুধ, কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান ছাড়া অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা।

ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, আমরা ঘোষণা দিয়েছি যদি কারও জরুরি জিনিসপত্র বা ওষুধ প্রয়োজন হয় তারা চাইলে পুলিশের সহযোগিতা নিতে পারে। অনেক প্রবাসী দেশে এসেছেন, তারা পুলিশের নির্দেশনা মেনে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। তাদের পরিবারের কিছু প্রয়োজন হলে পুলিশের সহযোগিতা নিতে বলেছি যাতে ওইসব প্রবাসীর হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত হয়।

তিনি বলেন, পতেঙ্গা মাইজপাড়া এলাকার ফাতেমা নামে এক বৃদ্ধা ফোন করে ওষুধ ও চালের জন্য বলেছিলেন। সকালে তা পৌঁছে দিয়েছি।

এছাড়া পতেঙ্গা এলাকায় গরীব কিছু মানুষকে পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে বলে জানান ওসি উৎপল বড়ুয়া।

বৃহস্পতিবার কোতোয়ালী থানা পুলিশ এক নারীসহ দুইজনকে তাদের বাসায় বাজার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেন বলে বাংলানিউজকে জানান ওসি মোহাম্মদ মহসীন।

পাঁচলাইশ থানার পুলিশ সদস্যরা বৃহস্পতিবার এক রোগীকে নিজেদের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছে দেন বলে বাংলানিউজকে জানান ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া।

ওসি আবুল কাশেম ভূইয়া বলেন, থানা এলাকার মানুষের পাশে রয়েছি আমরা। তাদের যেকোনো জরুরি প্রয়োজনের পুলিশকে জানাতে বলেছি। বৃহস্পতিবার এক মুমূর্ষু রোগীকে আমাদের সদস্যরা আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যরা প্রবাসী ও বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে তাদের ঠিকানায় গিয়ে সিএমপি কমিশনারের উপহার পৌঁছে দিচ্ছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে নগরের কয়েকটি এলাকায় ছিটানো হয়েছে জীবাণুনাশক। বৃহস্পতিবার চকবাজার, গণি বেকারি, চন্দনপুরাসহ নানা জায়গায় জীবাণুনাশক ছিটানো হয়।

সিএমপির সহকারী কমিশনার (চকবাজার জোন) মুহাম্মদ রাইসুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, চকবাজার থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে জীবাণুনাশক ছিটানো হয়েছে। এছাড়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মানুষকে নিজ নিজ বাসায় থাকতে অনুরোধ জানাচ্ছি। নিয়মিত মাইকিং করা হচ্ছে।

সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় পুলিশ মাঠে কাজ করছে। মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি প্রবাসী ও বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিনে অবস্থান নিশ্চিত করতে নজরদারি করছে। তাদের বাসায় ফলমূল উপহার হিসেবে পাঠানো হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে মানুষের পাশে থেকে তাদের ওষুধসহ জরুরি জিনিসপত্রও সংগ্রহ করে বাসায় পৌঁছে দিচ্ছে।

সিএমপি কমিশনার বলেন, মানুষকে বাসায় থাকতে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় যারা এ নির্দেশনা মেনে চলছেন তাদের পাশে পুলিশ রয়েছে। যারা এ নির্দেশনা মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২০
এসকে/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।