ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে

চট্টগ্রাম: দলবল নিয়ে সড়ক নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে ষাটোর্ধ এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে পাঁচলাইশ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে। 

মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নগরের বায়েজিদ থানাধীন আতুরারডিপো কামরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ওই বৃদ্ধের নাম মো. আবুল হাসেম (৬৭)।

তিনি আতুরারডিপো কামরাবাদ এলাকার নেছার আহমদের ছেলে।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার জমায়েত নিষিদ্ধ করলেও কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন খান দলবল নিয়ে ওই এলাকায় যান বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

জানা যায়, চলাচলের রাস্তা নিয়ে আবুল হাসেমের পরিবারের সঙ্গে তার প্রতিবেশী সালেহ জহুরের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষে আদালতে দেওয়ানী মামলা করেন। এসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে। দুই পরিবারের বাড়িতে চলাচলের জন্য তৈরি করা হয় এ রাস্তা।  

প্রতিবেশীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে বিরোধপূর্ণ জায়গা দখল করে দিতে কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন খান দলবল নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ করেন মারধরের শিকার আবুল হাসেমের ছেলে মো. সেলিম।

মো. সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তাটি দুই পরিবারের চলাচলের। এটি নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে আমাদের মামলা রয়েছে। কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন খান আমাদের খতিয়ানি জায়গা দখল করে রাস্তাটি তৈরি করতে চাচ্ছেন।

সেলিম বলেন, আমরা বলেছি- সিটি করপোরেশনের অধীনে রাস্তা করতে হলে অধিগ্রহণ করুন। কিন্তু তিনি সেটি না শুনে আমাদের অংশের উপর রাস্তা তৈরি করতে চাচ্ছেন। রাস্তা তৈরি করে জায়গা করতে চাচ্ছেন উনি।

সেলিম অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দুপুরে সবাই যখন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন কাউন্সিলর কফিল ৪০-৫০ জন লোক নিয়ে এসে রাস্তা তৈরি করবেন বলে আমাদের জমির উপর ওয়াল তৈরি করতে থাকেন। আমার বাবা বাধা দিলে তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। পরে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেন। পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা বের হলে কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন খান তার লোকজন নিয়ে চলে যান চলে জানান সেলিম।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. ইলিয়াস বাংলানিউজকে বলেন, দুপুরে আমাদের কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন খান কামরাবাদের ওখানে এসে রাস্তা নির্মাণের কাজ করতে চান। আবুল হাসেম বাধা দিলে তাকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন কাউন্সিলর। পরে আবুল হাসেমকে ধাক্কা দিয়ে বালির উপর ফেলে দেন।  

তিনি বলেন- কাউন্সিলর জানান যে সিটি করপোরেশনের অধীনে রাস্তার কাজ চলছে। কিন্তু সেটি কোনো ঠিকাদার করার কথা। টেন্ডার হওয়ার কথা। কোনো ঠিকাদারকে দেখিনি। পরে ওখানে স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে কাউন্সিলর চলে যান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তা অস্বীকার করেন কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন খান। তিনি দাবি করেন, সিটি করপোরেশনের অধীনে তিনি রাস্তা নির্মাণ করছেন। তিনি কারও জায়গা দখল করে রাস্তা তৈরি করছেন না।

কফিল উদ্দিন খান বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তা নির্মাণের কাজে আবুল হাসেম বাধা দিয়েছেন। আগে থেকে রাস্তাটি ছিল। সেখানে কাজ করছি।

আবুল হাসেমের জায়গা দখল করে রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে কফিল বলেন, দুই গ্রুপের মধ্যে মামলা রয়েছে এটা জানি। আবুল হাসেমের জায়গা হলে তিনি জায়গার দলিল দেখাতে পারেন।

পরে কফিল উদ্দিন খান থানায় ফোন করে সিটি করপোরেশনের রাস্তা নির্মাণের কাজে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি বাধা দিচ্ছে জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়।

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার বাংলানিউজকে বলেন, কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন খান ফোন করে জানান যে কিছু ব্যক্তি রাস্তা নির্মাণে বাধা দিচ্ছে। পরে ঘটনাস্থলে পু্লিশ পাঠানো হয়। এটি নিয়ে পুরোনো বিরোধ রয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।