ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শিশুদের উচ্ছ্বাসে মুগ্ধ একুশে পদকপ্রাপ্ত সুফি মিজান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
শিশুদের উচ্ছ্বাসে মুগ্ধ একুশে পদকপ্রাপ্ত সুফি মিজান শিশু-কিশোরদের সঙ্গে সুফি মিজানুর রহমান

আয়োজন ছিল শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার। বিচার কাজ শেষে অনুষ্ঠানস্থলে আসলেন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানস্থলে পা দিতেই শিশুরা তাকে ঘিরে ধরে। তিনি সবাইকে আগলে নিয়ে ছবি তুললেন। সময় কাটালেন তাদের সঙ্গে। কিছুক্ষণের জন্য নিজেই হয়ে গেলেন শিশু। ফিরে গেলেন প্রাণবন্ত শৈশবে। শিশুদের উচ্ছ্বাসে মুগ্ধ হলেন সুফি মিজান।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির মাঠে সোসাইটি ক্লাবের আয়োজনে একুশ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও একুশে পদক প্রাপ্ত সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের এমন দৃশ্য আন্দোলিত করেছে উপস্থিত সবাইকে।

অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথি সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, শিশুরাই একদিন এই সোনার বাংলাকে হিরার বাংলা করবে।

তারাই আগামী দিনের কাণ্ডারি। তিনি তখন অভিভাবককের একটি আপেল দেখান।
পরে আপেলকে দুই ভাগ করে সেখানে কতটা বিচি আছে সেটা দেখান। তখন সামনে থাকা শিশুরা বলে, আপেলে বিচি দেখা যাচ্ছে একটি।  

শিশুদের জবাব শুনে সুফি মিজান বলেন, আপেলের কয়টা বিচি আছে সেটা বলা সহজ। কিন্তু এই একটি বিচি থেকে গাছ হবে। সে গাছ থেকে কতটা ফল হবে কেউ জানে না। যদি এই একটি বিচিকে যত্ম করে রোপণ না করা হয় তাহলে লাখ লাখ ফল আশা করা অসম্ভব। তেমনি আজকের শিশুকে যদি যত্ম না করা হয় তাহলে তারাও সমাজ কিংবা রাষ্ট্র নির্মাণে অংশীদার হতে পারবে না। শিশুদের ভয় নয়, আনন্দ দিয়েই শিক্ষা দিতে হবে।

তিনি এক নোবেল জয়ী ও প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকের গল্পের কথা শোনান শিশুদের। তিনি বলেন, একদিন নোবেল জয়ী গেলেন এক গ্রামে। সেখানে মাঠের এক কোণায় বসে ছিলেন নোবেল জয়ীর প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক। যে শিক্ষক তাকে চুরির অপবাদ থেকে বাঁচিয়ে ছিলেন। সে শিক্ষককে মঞ্চে নিয়ে গিয়ে নিজের চেয়ারে বসালেন। তখন বললেন, আমাকে সেদিন চোরের অপবাদ থেকে না বাচালে আজকে আমি হতে পারতাম না। তখন সেই শিক্ষক বললেন, আমি নিজেও জানতাম না, তুমি সে দিন ঘড়িটা চুরি করেছিলে। আমি সেদিন সবাইকে চোখ বন্ধ করে যেমন থাকতে বলছিলাম। তেমনি আমিও চোখ বন্ধ করে
সবার প্যান্টের পকেট পরীক্ষা করছিলাম। আমি নিজেও জানতাম না কার পকেট থেকে সেদিন ঘড়িটি উদ্ধার করেছিলাম।

সুফি মিজান বলেন, শিক্ষকদের এমনভাবে শিক্ষা দিতে হবে যাতে শিশুরা আহত না হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি অভিভাবকের উদ্দেশে বলেন, আমরা যারা এখন আছি তারা থাকব না। শিশুরা থাকবে। তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। তারাই এই দেশকে আলোকিত করবে আগামীতে৷ তাই তাদের যত্ম নিতে হবে।

তিনটি গ্রুপে চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্লে থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত ১৫০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে প্রতিটি বিভাগ থেকে ৫ জনকে মোট ১৫ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান ও সোসাইটি ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ মহসিন। এসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইস্টিউটিউটের সহকারী অধ্যাপক সুব্রত দাস, সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মোর্শেদুল ইসলাম, সোসাইটি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আসিফ সিরাজ, ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল হকসহ ক্লাবের সদস্য ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশুদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।