ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

অপেক্ষমাণ ‘কনটেইনার জাহাজ’ শূন্য চট্টগ্রাম বন্দর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২০
অপেক্ষমাণ ‘কনটেইনার জাহাজ’ শূন্য চট্টগ্রাম বন্দর চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: অনেক বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে (সাগরে) অপেক্ষমাণ কনটেইনার জাহাজ নেই। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ ঘটনা ঘটে। কনটেইনারবাহী জাহাজের গড় অপেক্ষমাণ সময় ‘শূন্য দিনে’ নেমে এসেছে। 

চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ১০টি কি গ্যান্ট্রি ক্রেন স্থাপন, নতুন নতুন কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ, উন্নত ব্যবস্থাপনা, অটোমেশন, সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে দ্রুত কনটেইনার জাহাজগুলো থেকে লোড-আনলোড সম্ভব হওয়ায় এটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন বন্দরের কর্মকর্তা ও ব্যবহারকারীরা।

এর ফলে অপেক্ষমাণ জাহাজের জন্য শিপিং এজেন্ট বা আমদানিকারককে দিনপ্রতি যে ১০-১৫ হাজার ডলার বাড়তি গুনতে হতো তা কমে আসবে।

একই সঙ্গে সরকারের কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস নীতি বাস্তবায়নেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী অপেক্ষমাণ কনটেইনার জাহাজ শূন্য দিনে নেমে আসা প্রসঙ্গে বলেন, নিঃসন্দেহে বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বেড়েছে।

এর সঙ্গে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চীন থেকে কনটেইনারবাহী জাহাজ কমিয়ে ফেলেছে মেইন লাইন অপারেটররা। এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশেও। তবে এটা ঠিক, সপ্তাহখানেকের মধ্যে যে সব এলসি হচ্ছে কিংবা যেসব এলসি বাদ পড়ছে সেগুলোর প্রভাব পড়বে আরও কয়েক সপ্তাহ পর।

জানতে চাইলে দেশের শীর্ষ কনটেইনার টার্মিনাল অপারেটর মেসার্স সাইফ পাওয়ারটেকের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) ক্যাপ্টেন তানভির বাংলানিউজকে বলেন, জোয়ারের সময় কর্ণফুলী চ্যানেল দিয়ে অভিজ্ঞ পাইলটের তত্ত্বাবধানে বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ কনটেইনার জাহাজ সিসিটি, এনসিটি, জিসিবি বার্থে আনা-নেওয়া করা হয়। রোববার দুপুরে জাহাজ আনা-নেওয়ার পর বন্দরের বহির্নোঙরে একটি কনটেইনার জাহাজও অপেক্ষমাণ ছিলো না।

তিনি বলেন, নিকট অতীতে এটি বিরল ঘটনা। নতুন নতুন কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংযোজনের কারণে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাহাজ বন্দর ছাড়তে পারছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পেরেছি বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ কনটেইনার জাহাজ শূন্য করতে। এটি অনেক বড় একটি মাইলফলক।

এ সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, সবাই জানেন মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত আমরা বৃষ্টি, ভারী বর্ষণ, ঘূর্ণিঝড়সহ বৈরী আবহাওয়ার কারণে পুরোদমে কাজ করতে পারি না। এখন আবহাওয়া অনুকূলে, তাই বন্দরের পাশাপাশি পুরোদমে কাজ করতে পারছেন আমাদের স্টেকহোল্ডাররা। আরেকটি বিষয় হচ্ছে-একটি গ্যান্ট্রি ক্রেন ১ লাখ টিইইউ’স হ্যান্ডেল করতে পারে। ১০টি গ্যান্ট্রি ক্রেন যুক্ত হয়েছে বন্দরে। স্বাভাবিকভাবে ১০ লাখ টিইইউ’স হ্যান্ডেল বেড়ে গেছে। বন্দরের ইয়ার্ড সম্প্রসারণের কারণে এখন ৫০ হাজারের বেশি কনটেইনার রাখা সম্ভব হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস কমাতে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। বন্দর কর্তৃপক্ষও পরিকল্পনা অনুযায়ী টাইম টু অ্যাকশন ফলো করছে। সব মিলে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে।

২০১৯ সালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৩০ লাখ ৮৮ হাজার টিইইউ’স কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছিলো। ২০১৮ সালে যা ছিলো ২৯ লাখ ৩ হাজার টিইইউ’স। ২০১৯ সালে বন্দরে জাহাজ এসেছিলো ৩ হাজার ৮০৭টি। ২০১৮ সালে যা ছিলো ৩ হাজার ৭৪৭টি।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা,  ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২০
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।