বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সংরক্ষক ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, কনটেইনারবাহী জাহাজগুলো সরাসরি বন্দরের মূল জেটিতে চলে আসার পর করোনা ভাইরাস প্রতিরোধমূলক স্ক্রিনিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। জাহাজের সব কর্মকর্তা ও নাবিকদের পরীক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে।
>> করোনা ভাইরাস: প্রস্তুত বন্দরের অ্যাম্বুল্যান্স শিপ
সূত্র জানায়, জাহাজের ক্যাপ্টেন সংক্রামক ব্যাধি নেই এমন ঘোষণা দেওয়ার পরই সাগরে বা বহির্নোঙরে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের অনুমতি মিলছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই নতুন পদ্ধতি কার্যকর এবং কড়াকড়ি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। যতদিন করোনাভাইরাসের প্রকোপ থাকবে, ততদিন এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীন বন্দরে দায়িত্বরত পোর্ট হেলথ অফিসার মোতাহার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গত ৩১ জানুয়ারি থেকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্ক্রিনিং কার্যক্রম শুরু করেছি আমরা। প্রথম দিন ৮ জন, দ্বিতীয় দিন ২৫ জন, তৃতীয় দিন ৫৪ জন নাবিকের স্ক্রিনিং করেছি। যা এখনো অব্যাহত আছে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ১৮ জন, আজ শুক্রবার ২৫ জন নাবিকের স্ক্রিনিং করেছি। এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি, চীন থেকে ছেড়ে আসা জাহাজগুলোর নাবিকদের শতভাগ স্ক্রিনিং কার্যক্রম সম্পন্ন করছি আমরা। এখনো কারও মধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের প্রধান লক্ষণগুলো পাওয়া যায়নি।
সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে চীনের বন্দর হয়ে আসা অনেক জাহাজের নাবিকদের পরীক্ষা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষ টিম। এর মধ্যে রয়েছে এমভি ক্যালিফোর্নিয়া ট্রেডার্স, জেওয়াই প্রোগ্রেস, ইমলি, সেফ সি নেহা-২, টরসুইন, আনিকা, নেপচুন, হারভেস্ট, ড্রাগন লাকি ইত্যাদি। হাতে গোনা কিছু নাবিক চীনের নাগরিক হলেও তারা চীন ছেড়েছেন মাসখানেক আগে। বেশিরভাগ নাবিক ভারতীয়। এ ছাড়া অন্যান্য দেশের নাবিকও রয়েছেন।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের আমদানির বড় অংশ আসে চীন থেকে। তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক উপকরণ, ভোগ্যপণ্য নিয়ে মাসে ২০-২৫টি জাহাজ আসে চীন থেকে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবের কারণে ক্রমে মেইন লাইন অপারেটররা জাহাজ কমাচ্ছে এ রুটে। এলসিও কমছে। সব মিলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে জাহাজের নাবিকদের স্ক্রিনিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্টেক হোল্ডারদের সাম্প্রতিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমে জাহাজের ক্যাপ্টেন, শিপিং এজেন্টও সব ধরনের সহযোগিতা করছে।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, ভোগ্যপণ্যের বাজারে বিশেষ করে আদা, রসুন, পেঁয়াজ, মসলার ক্ষেত্রে চীনের বড় প্রভাব রয়েছে আমাদের দেশে। কোনো অজুহাতে যাতে এসব পণ্যের কৃত্রিম সংকট, মজুদদারির কারণে অস্বাভাবিক পর্যায়ে দাম না বাড়ে সে জন্য এখন থেকেই প্রশাসনিক নজরদারির পাশাপাশি বিকল্প দেশ খুঁজতে হবে সাপ্লাই চেন ঠিক রাখার জন্য। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারকে এসব পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের বিনা সুদে ঋণসহ প্রণোদনা দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২০
এআর/টিসি