ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দুদকের জালে শিক্ষাবোর্ডের সিবিএ নেতা নাছির

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২০
দুদকের জালে শিক্ষাবোর্ডের সিবিএ নেতা নাছির চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের লগো।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের স্টেনোগ্রাফার এবং সিবিএ নেতা মো. নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সিবিএ নেতা নাছিরের বিরুদ্ধে উঠা দুর্নীতির ১২টি অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেছে সংস্থাটি।

সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়।

দুদকের উপ-পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-২) মো. হাফিজুল ইসলামের সই করা ওই চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

আরও খবর>>
** 
পদোন্নতি নিয়ে অভিযোগের ‘পাহাড়’
** শিক্ষাবোর্ড: ৭ কর্মকর্তার পদোন্নতি নিয়ে অডিট আপত্তি

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘মো. নাছির উদ্দিন… এর বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

প্রাপ্ত অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ’

এদিকে স্টেনোগ্রাফার নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের বিষয়ে দুদকের চিঠি পাওয়ার পর এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ।

তদন্ত কমিটি নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে উঠা দুর্নীতির ১২টি অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শেষে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। পরে বোর্ডের পক্ষ থেকে ওই তদন্ত প্রতিবেদন দুদকের কাছে পাঠানো হবে।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. প্রদীপ চক্রবর্ত্তী বাংলানিউজকে জানান, দুদক চিঠি দিয়ে নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে।

তিনি বলেন, এরই প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য বোর্ড নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাছিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যত অভিযোগ

দুর্নীতি দমন কমিশনে দেওয়া অভিযোগ পত্রে মো. নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মোট ১২টি দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে- তথ্য গোপন করে অফিস সহকারী পদ থেকে স্টেনোটাইপিস্ট পদে পদোন্নতি, স্টেনোটাইপিস্ট পদ থেকে স্টেনোগ্রাফার পদে পদোন্নতির সময় বিধি বহির্ভূতভাবে ১০ গ্রেড গ্রহণ, বিদ্যালয়-কলেজের স্বীকৃতি প্রদানের তদবির করে কোটি টাকা কামাই, টেন্ডার বাণিজ্যের মাধ্যমে বোর্ডের বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ।

আছে- ফলাফল জালিয়াতি করে অর্থ সম্পদের মালিক, বোর্ডের কাজে ফাঁকি দিয়ে অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে টেন্ডার বাণিজ্য, বোর্ড চেয়ারম্যানের পুরনো গাড়ি বিক্রিতে দুর্নীতি, স্ত্রীর জন্য কোটি টাকা দামের গাড়ি ক্রয়, বোর্ডের পুরাতন কাগজ বিক্রিতে দুর্নীতি, চেয়ারম্যানের কক্ষ সাজানোর কাজে দুর্নীতি, প্রচার পত্র বিলি এবং বোর্ডের জায়গায় ক্যান্টিন তৈরির অভিযোগ।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের স্টেনোগ্রাফার এবং সিবিএ নেতা মো. নাছির উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, দুদকে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো করা হয়েছে তার সব মিথ্যা। দুদক বা শিক্ষাবোর্ড এ বিষয়ে তদন্তের সময় আমি পূর্ণ সহযোগিতা করবো। আমার বক্তব্য তুলে ধরবো।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২০
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।