ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মারামারির পর চবিতে অবরোধের ডাক ছাত্রলীগের

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
মারামারির পর চবিতে অবরোধের ডাক ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এক পক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ঘটনার সূত্রপাত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ছাত্রলীগের বগিভিত্তক সংগঠন বিজয়গ্রুপের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান সিএফসি গ্রুপের কর্মী শামীম আজাদ।

একপর্যায়ে আজাদকে মারধর করেন বিজয় গ্রুপের অনুসারীরা।

মারধরের খবরটি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে সিএফসি গ্রুপের অনুসারীরা সোহরাওয়ার্দী হলে গিয়ে বিজয় গ্রুপের তিন কর্মীর উপর হামলা চালান।

হামলায় আহতরা হলেন রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের আবু বকর সিদ্দিক জীবন, আইন বিভাগের অপূর্ব এবং গণিত বিভাগের রাওফান।

সন্ধ্যায় নেতা-কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে এবং সিএফসি গ্রুপের নেতা শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের গ্রেফতার ও সাংগঠনিক পদ প্রত্যাহারের দাবিতে চবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয় বিজয় গ্রুপ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত ও সোহরাওয়ার্দী হলে পুলিশের সহায়তায় তল্লাশি চালায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বুধবার রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত এ দুই হলে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় দুই হল থেকে দুই বস্তা পাথর উদ্ধার করা হলেও কাউকে আটক করা হয়নি।

বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইলিয়াস বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি রাত ৯টার মধ্যে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বৃহস্পতিবার থেকে চবিতে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিএফসি গ্রুপের নেতা রেজাউল হক রুবেল বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি ভাঙার পরিকল্পনা নিয়ে একটি পক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে বগি ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ। বগি ভিত্তিক কোনো গ্রুপ যদি ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এস এম মনিরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা দুটি হলে তল্লাশি চালিয়েছি। দুই বস্তা পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।

চবির প্রধান ফটকে ছাত্রলীগের তালা

এদিকে বিকেলে ছাত্রলীগের আরেক বগিভিত্তিক সংগঠন সিক্সটি নাইনের তিন কর্মীর উপর দুর্বৃত্তদের হামলার জেরে প্রধান ফটকে তালা দিয়েছে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় রেল স্টেশন এলাকার একটি দোকানে বসে ছিলেন সিক্সটি নাইনের তিন কর্মী নাট্যকলা বিভাগের মাহফুজুল হুদা লোটাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইবরাহীম খলিল মুকুল এবং ইতিহাস বিভাগের জাহিদ শাকিল।

এ সময় তাদের উপর অতর্কিত হামলা করেন মুখোশধারী ৪-৫ জন দুর্বৃত্ত। পরে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।

এ ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন সিক্সটি নাইনের নেতা-কর্মীরা। তারা ক্যাম্পাস থেকে শহরমুখী বিকেলের শাটল ট্রেনও আটকে দেন।

চবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বাংলানিউজকে বলেন, সিক্সটি নাইন গ্রুপের তিন জনের উপর আরএস গ্রুপের ছেলেরা অতর্কিত হামলা চালানোর খবর পেয়েছি। প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ ধরণের ঘটনা ঘটছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
এমএ/এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।