ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বন্দর রক্ষায় কর্ণফুলী বাঁচানোর বিকল্প নেই: রফিকুল ইসলাম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
বন্দর রক্ষায় কর্ণফুলী বাঁচানোর বিকল্প নেই: রফিকুল ইসলাম মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কর্ণফুলী পরিদর্শন করেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা

চট্টগ্রাম: বন্দর রক্ষায় কর্ণফুলী নদী বাঁচানোর বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে পাইলট ভ্যাসেল রক্ষীতে চট্টগ্রাম বন্দরের নির্মাণাধীন পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি), নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) ও কর্ণফুলী চ্যানেল পরিদর্শনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদী ড্রেজিংয়ের পাশাপাশি দূষণ রোধ ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।

 বন্দরের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আছে। নদী ঠিক থাকলে বন্দরের অনেক সক্ষমতা বাড়বে।
বন্দরের ইক্যুইপমেন্ট দরকার আছে, তার চেয়ে বেশি দরকার নদীকে রক্ষা করা। নদীকে রক্ষা করা আমি মনে করি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের লক্ষ্য এ বন্দরকে আরও গতিশীল করা, আধুনিক বন্দরে রূপান্তর করা। চট্টগ্রাম বন্দর অনেক অগ্রগতি সাধন করেছে। চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা-এ তিনটি সমুদ্রবন্দরের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শিপিং সেক্টরের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী না হলে এতো অভূতপূর্ব, ব্যাপক উন্নয়ন হতো না। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা দরকার।

কর্ণফুলী নদীতে যে সিলট্রেশন হচ্ছে তা ড্রেজিংয়ে সমস্যা করছে। অনেক খাল দিয়ে বর্জ্য নদীতে পড়ছে। বিভিন্ন খাল দিয়ে পলিথিন, কাপড়সহ বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পড়ছে। বিশেষ ড্রেজার সংগ্রহ করে নদীর তলদেশের বর্জ্য সরানো হবে। এরপর ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হবে। শহর থেকে যেন খাল দিয়ে বর্জ্য সরাসরি নদীতে না পড়ে সে জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও বন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে পদক্ষেপ নেবে। খালের মুখে নেটের বাঁধ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, বন্দরের উন্নয়নের জন্য নদী বাঁচাতে হবে। নদীর কোনো অংশ যেন দখল না হয়। ড্রাফটের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বে-টার্মিনাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি জানি বে-টার্মিনাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটিকে ফার্স্ট ট্রেকে এনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ডেকেছেন সভায়। দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য যা কিছু করা দরকার নির্দেশনা দেবেন। আমার সঙ্গে মাননীয় সংসদ সদস্য যারা আছেন, সবাই একমত যে-বে টার্মিনাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটার দিকে অবশ্যই আমাদের নজর দিতে হবে। তাহলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে।   

কর্ণফুলী চ্যানেলে ছোট ছোট নৌযান নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে দেখেছি মাছধরার নৌকা, ট্রলারগুলোও বন্দর দিয়ে ঢুকে যায়। সরকার অ্যাকশন নেয়, কিন্তু পেরে উঠে না। পর্যায়ক্রমে সমাধান করতে হবে। আমাদের সদরঘাটে অসংখ্য নৌকা পারাপার হচ্ছে। নিষেধ করা সত্ত্বেও মানছে না। যাত্রীরা নৌকায় এসে লঞ্চে উঠে। আমরা একেবারে টপ লেবেলের পোর্ট হতে পারবো না। সময় লাগবে। তবে আগের তুলনায় নদীতে ট্রাফিক কম দেখছি। ছোটখাটো জলযান যেগুলো সমস্যা সৃষ্টি করে সেগুলোর সংখ্যা কম। আমি মনে করি, পর্যায়ক্রমে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।  

কমিটির সদস্যরা বোট ক্লাব থেকে পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু করে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত পরিদর্শন করেন।

কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিদর্শন টিমে ছিলেন সদস্য রণজিৎ কুমার রায়, মাহফুজুর রহমান, এম আবদুল লতিফ, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, এসএম শাহজাদা, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আব্দুছ ছাত্তার, উপ সচিব বেগম মালেকা পারভীন, ড. দয়াল চাঁদ মণ্ডল, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উপ পরিচালক আবদুল জব্বার, সিনিয়র সহকারী সচিব এসএম আমিনুল ইসলাম।

এ সময় বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল) ক্যাপ্টেন মহিদুল হাসান চৌধুরী, হারবার মেরিন কমডোর শফিউল বারী, চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার এম আরিফুর রহমান,

সচিব মো. ওমর ফারুক, ডেপুটি ম্যানেজার (এস্টেট) জিল্লুর রহমান, উপ সচিব আজিজুল মওলা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে সংসদীয় কমিটি সাগরপথে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর এলাকা পরিদর্শনের কথা রয়েছে।

>> সংসদীয় কমিটির সদস্যদের বন্দর পরিদর্শন

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২০
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।