ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খাদ্যপণ্যের কাঁচামালে ৩৬০ দিনের এলসি চান ব্যবসায়ীরা

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৯
খাদ্যপণ্যের কাঁচামালে ৩৬০ দিনের এলসি চান ব্যবসায়ীরা ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: গম, মটর, ছোলা, ডাল, ভুট্টা, তৈলবীজ ইত্যাদি খাদ্যপণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে এলসির মেয়াদ ১৮০ দিনের পরিবর্তে ৩৬০ দিন করার অনুমতি চান ব্যবসায়ীরা। দেশে প্রতিবছর দেড় কোটি টন এ জাতীয় কাঁচামাল আমদানি করা হয়। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ইউক্রেন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসব পণ্য আসে।

সূত্র জানায়, ১৮০ দিনের ইউপাস-এলসিতে বিদেশ থেকে ৫০-৬০ হাজার টন পণ্য ধারণক্ষমতার বড় জাহাজে (মাদার ভ্যাসেল) খোলা খাদ্যশস্য চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসে। কর্ণফুলী নদীর চ্যানেলের গভীরতা কম হওয়ায় বন্দরের মূল জেটিতে এসব জাহাজ আনা যায় না।

বাধ্য হয়ে উত্তাল সাগরে বড় জাহাজের পাশে ছোট ছোট জাহাজ বেঁধে এসব পণ্য খালাস করা হয়। তারপর নদীপথে বিভিন্ন বড় কারখানা, নদী বন্দর, নৌঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় ১টি জাহাজের খাদ্যপণ্যের কাঁচামাল জাহাজীকরণ থেকে খালাস পর্যন্ত ১০০-১২০ দিন সময় লাগে। এলসি নেগোসিয়েশন হয়ে বন্দরে আসতে সময় লাগে ক্ষেত্রভেদে ৪৫-৬০ দিন। খালাসে সময় লাগে ৬০-৭৫ দিন। বিভিন্ন সময় জাহাজ জট, লাইটার জাহাজের স্বল্পতা, বৈরী আবহাওয়া, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কর্মবিরতিসহ নানা কারণে পণ্য খালাসে অতিরিক্ত সময় লাগে।

জাহাজ থেকে খালাসের পর এসব কাঁচামাল গুদামজাতকরণ, কারখানায় নিয়ে উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরও ৬০-৮০ দিন ব্যয় হয়। এরপর দেশের বাজারে উৎপাদিত পণ্য শতভাগ বাকিতে বিক্রি করতে হয়। যার মেয়াদ ৬০-১২০ দিন। সহজ হিসাবে আমদানি করার কাঁচামালের ক্যাশ কনভারশন সাইকেল সাধারণত ২৪০-৩৪০ দিন হয়।

রুবি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড প্রতিবছর বাল্ক জাহাজ ও কনটেইনারযোগে ৮-১০ লাখ টন শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে খাদ্যশস্য আমদানি করে। গম, মটর, ছোলা, মসুর ডাল, চাল, ভুট্টা ও তৈলবীজ নিয়মিত আমদানি বাবদ প্রতিষ্ঠানটির গড় টার্ন ওভার প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর বাইরে বাজারে সংকট সৃষ্টি হলে পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্যও আমদানি করে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে শিল্প কারখানার কাঁচামাল হিসেবে খাদ্যপণ্য আমদানির ইউপাস এলসির মেয়াদ ৩৬০ দিন করার জন্য।

খাতুনগঞ্জের বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, লোহাসহ বেশ কিছু পণ্যে ইউপাস এলসির মেয়াদ ৩৬০ দিন আছে। আমরা মনে করি, শিল্পকারখানার কাঁচামাল হিসেবে আমদানি করা খাদ্যপণ্যের ইউপাস এলসির মেয়াদও ৩৬০ দিন করলে নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেন নিশ্চিত করা যাবে।

তিনি বলেন, যেহেতু ১৮০ দিন মেয়াদি এলসিতে আমদানি পণ্যের কাঁচামাল ক্যাশ কনভারশন সাইকেল ২৪০-৩৪০ দিন, ফলে প্রায় সময় ইউপাস এলসির মেয়াদান্তে দায় শোধের ক্ষেত্রে আমদানিকারককে সীমাহীন অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। বর্তমানে আমরা এ অসুবিধাকে সাময়িকভাবে সামাল দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কিছু কিছু এলসির মেয়াদ ৬০-৯০ দিন বাড়িয়ে থাকি। আমাদের আমদানিকৃত পণ্যের কাঁচামাল ক্যাশ কনভারশন সাইকেল অনেক লম্বা এবং প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সাপোর্ট না থাকাতে এ সমস্যার কাছাকাছি কোনো সমাধান খুঁজে পাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ইউপাস এলসির মেয়াদ ১৮০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৩৬০ দিন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৯
এআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।