ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

স্টিভিডোরস অ্যাসোসিয়েশনের নাম পাল্টে ২৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ!

তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯
স্টিভিডোরস অ্যাসোসিয়েশনের নাম পাল্টে ২৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ! লোগো

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ মাস্টার স্টিভিডোরস অ্যাসোসিয়েশনের নাম পাল্টে ও সদস্যদের সই জাল করে বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা ২৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। 

দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ মাস্টার স্টিভিডোরস অ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্ভুক্ত কো অপারেটিভ সোসাইটি ও স্টিভিডোরিং সার্ভিস অব বাংলাদেশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানটির নগর কার্যালয় ডবলমুরিং থানাধীন আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার হোসেন চেম্বারে।

সংগঠনের সদস্য ৫৭ জন।

কিছু দুর্নীতিবাজ নেতা জাল দলিল বানিয়ে ও সদস্যদের সই জাল করে বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটরর্স অ্যাসোসিয়েশন নামকরণ করেছে।
একইসঙ্গে বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা সংগঠনের ২৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।  

এর মধ্যে আগ্রাবাদ শাখার ঢাকা ব্যাংক থেকে ৪ কোটি, সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে ৪ কোটি, ব্যাংক এশিয়া থেকে ৪ কোটি, এক্সিম ব্যাংক থেকে ৪ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক থেকে ৪ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে ৪ কোটি, ওয়ান ব্যাংক থেকে ৪ কোটি ও অন্যান্য ব্যাংক থেকে ১ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়।

এ ছাড়া আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের বেপারিপাড়ায় সংগঠনের সদস্যদের অনুদানের টাকায় কেনা ৭ কাঠা জমি বিক্রির ১০ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংকে সদস্যদের চাঁদা ও অনুদানের টাকার হদিস মিলছে না।

মেসার্স কামাল এন্টারপ্রাইজের মালিক কামাল উদ্দিনের অভিযোগ, এইচএস মেরিন এজেন্সির মোহাম্মদ ইব্রাহীম, বিএসটিসি লিমিটেড বশর স্কয়ারের আনোয়ার হোসেন মজুমদার, কেএম এজেন্সির মশিউল আলম স্বপন, সি কোস্ট শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং লিমিটেডের আবু ছৈয়দ, গ্রীন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের একেএম হাসানুজ্জামান (রাসেল), নাছির অ্যান্ড ব্রাদার্সের নাছির উদ্দিন, পেস্টিস করপোরেশন লিমিটেডের রফিকুল ইসলাম মোমিন, সি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের জানে আলম, আকমল খান অ্যান্ড কোম্পানির আসাদ খান, ওশান এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের এএইচএম মনজুরুল আলম, ফ্রিট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মুস্তাফিজুর রহমান, স্টিভিডোর ফ্রেন্ডস সিন্ডিকেট লিমিটেডের আবদুল মাবুদ রাশেদ, কেএস আব্দুল হাকিম অ্যান্ড সন্সের আবদুছ সোবহান, গ্রেট বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজ কোম্পানির মেজবা উদ্দিন লাভলু, অ্যাসোসিয়েট ট্রেডার্স অ্যান্ড মেরিনার্স লিমিটেডের এসএম এনামুল হক এ দুর্নীতিতে জড়িত।  

এর আগে গত আগস্টে বাংলাদেশ মাস্টার স্টিভিডোর অ্যাসোসিয়েশনের নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনে রূপান্তর করে সংগঠনের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে মা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক খুরশিদুল আলম চট্টগ্রাম চেম্বার ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন।

বার্থ অপারেটর প্রতিষ্ঠানের একজন মালিক বলেন, বাংলাদেশ মাস্টার স্টিভিডোর অ্যাসোসিয়েশনের নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন করা হয়েছে সদস্যদের অনেকের অগোচরে।  

বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান একেএম শামসুজ্জামান রাসেল বাংলানিউজকে বলেন, ১৫-২০ বছর আগে অ্যাসোসিয়েশনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আমার আগে যিনি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ছিলেন তার আমলে ব্যাংকের টাকা, জমির টাকাসহ সব ধরনের আর্থিক হিসাব প্রপারলি করে গেছেন। এরপরও কোনো সমস্যা থাকলে আমরা নিজেরা আলোচনা করে ঠিক করবো।

তিনি বলেন, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে কেউ আমাদের কাছে কোনো ধরনের দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ করেননি।  

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ শিপ হ্যান্ডলিং অ্যাসোসিয়েশনকে বৈধতা দেয়নি। অ্যাসোসিয়েশনের রেজিস্ট্রেশনের জন্য সরকারের আলাদা বিভাগ বা দফতর রয়েছে। এটা ঠিক যে মাস্টার স্টিভিডোরস অ্যাসোসিয়েশন থেকে বার্থ অপারেটর ও শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯
টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।