ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

১৮শ ফুট উঁচুতে বিদ্যুৎ, জানুয়ারিতে সাজেকে সংযোগ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯
১৮শ ফুট উঁচুতে বিদ্যুৎ, জানুয়ারিতে সাজেকে সংযোগ সাজেক ভ্যালি।

চট্টগ্রাম: গাড়ি ছুটছে দু’পাশের সবুজ আর উঁচু পাহাড় মাড়িয়ে। এভাবেই চললো ৪৯ কিলোমিটার। ১৮শ ফুট উঁচুতে ওঠার পর স্বপ্নের মতো জায়গা। মেঘের ভেলার ফাঁকে সূর্যের উঁকিঝুঁকি, হিমশীতল হাওয়া- সব মিলিয়ে সেখানে পাহাড়ের রং যেন আকাশের মতোই।

বলছিলাম রাঙামাটির সাজেক ভ্যালির কথা। এই দুর্গম জনপদটি এখন আর আগের মতো নেই।

উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে পুরো সাজেক ভ্যালি। সেখানকার মানুষের বিদ্যুৎ ও পানির সমস্যাও মিটিয়ে দিচ্ছে সরকার।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে ৪৯ কিলোমিটার দূরে ও ১৮শ ফুট উঁচুতে সাজেকে বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে খুঁটিতে তার টাঙানোর কাজ।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সাজেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সাজেক ইউনিয়নের আয়তন ১ হাজার ৭৭১ বর্গকিলোমিটার। সেখানে ৩০ হাজার লোক স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। এছাড়া প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার পর্যটক ভ্রমণ করছেন সাজেক। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য সমাদৃত সাজেক ভ্যালিতে অর্ধশতাধিক রিসোর্ট ও পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠেছে। এ অঞ্চলে শিল্প কারখানাও গড়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। এজন্য বিদ্যুৎ ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন অপরিহার্য।

সাজেক ভ্যালি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে উন্নয়নের জন্য প্রায় ৫৬৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় ২০১৭ সালে। প্রকল্পের আওতায় এ তিন জেলায় ১২টি নতুন ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া বিদ্যমান সাব-স্টেশনগুলোর সংস্কার ও লোড ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। পুরাতন লাইন সংস্কারের পাশাপাশি নতুন করে স্থাপন করা হয়েছে ১ হাজার ৩১০ কিলোমিটার বিতরণ লাইন। এরমধ্যে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে সাজেক পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে সাজেকসহ তিন জেলার ৫৬ হাজার নতুন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক (ডিসি) একেএম মামুনুর রশীদ বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে তিন পার্বত্য জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রকল্পও একটি। সাজেক ভ্যালিতে পর্যটনের ক্ষেত্রে বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সেখানে বিদ্যুতের সুবিধা দেওয়ার লক্ষে ইতোমধ্যে সঞ্চালন লাইন বসানোর কাজ চলছে।

সাজেক ভ্যালি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বাংলানিউজকে জানান, প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে ব্যয় হবে ৫৩৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা ও অবশিষ্ট ২৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা খরচ হবে পিডিবির নিজস্ব তহবিল থেকে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সাজেকের মানুষ বিদ্যুত সংযোগ পাবেন। সেখানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া যাবে।

তিনি জানান, তিন পার্বত্য অঞ্চলে ৮৬ হাজার ৫৬৪ গ্রাহকের জন্য লোড চাহিদা রয়েছে ৫৪ দশমিক ৫০ মেগাওয়াট। সরবরাহ লাইনের ধারণক্ষমতা রয়েছে ৯৯ মেগাওয়াট। বার্ষিক লোড চাহিদা বৃদ্ধির হার ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ হিসাবে ২০৩০ সালের মধ্যে এ তিন জেলার লোড চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ২৭৯ মেগাওয়াট। একইসঙ্গে গ্রাহক চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে ১ লাখ ৭৩ হাজার ১২৮ জনে। এসব বিবেচনায় নিয়ে পার্বত্যাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯
জেইউ/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।