ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ: অধ্যাপক সিরাজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৯
শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ: অধ্যাপক সিরাজ অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ।

চট্টগ্রাম: ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষার্থীদের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টি। শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলছিলেন কথাগুলো।

লোকপ্রশাসন বিভাগের এ অধ্যাপক বলেন, উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ চুকিয়ে একজন শিক্ষার্থী তীব্র প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। দেশ সেরা মেধাবীরাই এ সুযোগ পায়।

কিন্তু কী কারণে তারা পড়াশোনা থেকে সরে যায়, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে, অসীম সম্ভাবনাময় একজন শিক্ষার্থী কেনো পরিবারের, সমাজের, দেশের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়- এসব কী আমরা ভেবেছি?

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি- পান থেকে চুন খসলেই শাস্তি, কথায় কথায় বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধ দমানো যায় না। বরং এসবের কারণে অপরাধী আরো ভয়ংকর হয়ে উঠে।

আমি মনে করি- অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর বিচারের চেয়ে অপরাধ যাতে সংঘটিত না হয় সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।

‘একজন মেধাবী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে কেনো অপরাধে জড়াচ্ছে তা খুঁজে বের করতে হবে। তাকে পড়াশোনার পরিবেশ দিতে হবে। তার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থী যাতে পথ না হারায়- তা দেখাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। ’

অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, উপাচার্য ম্যাম ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ দায়িত্বের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চাই। ‘ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখনো কোনো নীতিমালা তৈরি হয়নি। চেষ্টা থাকবে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজে লাগে এমন একটি নীতিমালা তৈরি করা।

‘শিক্ষার্থীদের বিপদে পাশে দাঁড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আলাদা সেল আছে- অনেক শিক্ষার্থী সেটা জানে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব কী, তাদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত, কোন কোন বিষয় তাদের এড়িয়ে চলা উচিত- এসব নিয়ে বিভাগ ভিত্তিক সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করবো। ’

তিনি বলেন, ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের কঠিন সময়ে চবি প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। চবি তখন মৌলবাদী শক্তির আখড়া। কিন্তু সাহস হারাইনি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সবাইকে নিয়ে দিন-রাত কাজ করেছি। চবি ক্যাম্পাসকে মৌলবাদমুক্ত করেছি। চবিকে প্রগতির চর্চাকেন্দ্র হিসেবে তৈরি করেছি।

‘সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় চবি আজ মৌলবাদমুক্ত। ক্যাম্পাসে অবাধে প্রগতির চর্চা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট কয়েকগুণ বেড়েছে। গবেষনা খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে আলোড়ন ‍সৃষ্টি করা গবেষণা করছেন। এখন সময় এগিয়ে যাওয়ার। ’

অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, চবিকে বিশ্বমানের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে উপাচার্য ম্যাম যে ভিশন নিয়েছেন- তা বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ সহায়তা করবো। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি, শিক্ষার্থীদের সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়া, চবিকে শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করবো।

‘আমি বিশ্বাস করি, শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে সন্তানতুল্য। তাদের উপর শক্তি প্রয়োগ করে, শাস্তি দিয়ে নয়- আলাপ আলোচনা, ভালোবাসা দিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৯
এমআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।