জানা গেছে, এই ফ্লাইওভারের বন্দর অংশে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে মূল নকশায় পরিবর্তন আনা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।
প্রকল্পটির ছয়টি ধাপে বিভক্ত অংশগুলো হচ্ছে, লালখানবাজার-দেওয়ানহাট (১৩শ মিটার চার লেন), দেওয়ানহাট-বারেক বিল্ডিং (২ হাজার মিটার চার লেন মূল ফ্লাইওভার), বারেক বিল্ডিং-সল্টগোলা (২৯শ মিটার চারলেন মূল ফ্লাইওভার), সল্টগোলা-সিমেন্ট ক্রসিং (৩১৫০ মিটার চারলেন মূল ফ্লাইওভার), সিমেন্টক্রসিং-কাটগর (২১৫০ মিটার চারলেন মূল ফ্লাইওভার), কাটগর-ভিআইপি রোড (২৩৫০ মিটার চারলেন মূল ফ্লাইওভার এবং সি বিচ থেকে ভিআইপি রোড ৮৫০ মিটার দুই লেন ফ্লাইওভার নির্মাণ)।
সরেজমিন দেখা গেছে, প্রকল্পের অ্যালাইনমেন্টের মধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) ৩৩/১১/০.৪ কেভি পোল, লাইন উপকেন্দ্র ও রোড ক্রসিং লাইন না সরানোর কারণে প্রকল্পের বিভিন্ন অংশে পাইলিং ও ফাউন্ডেশনের কাজ ধীর গতিতে চলছে। সল্টগোলা ক্রসিং থেকে সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার অংশের সাব-সয়েল ইনভেস্টিগেশনের কনফার্মিং টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। ওই এলাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডিটেইল্ড ডিজাইনও সম্পন্ন হয়েছে।
সিমেন্ট ক্রসিং থেকে সি-বিচ পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার অংশে এ পর্যন্ত ৩২০টি পাইল, ২০টি পাইল ক্যাপ ও ২০টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। ওই এলাকার নিরাপত্তা ফেন্সিংয়ের বাইরে প্রয়োজনীয় দুই লেন রাস্তা রাখার জন্য প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার কার্পেটিংসহ রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজ শেষ হয়েছে।
নকশা পরিবর্তনের পর বারিক বিল্ডিং সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত রাস্তার বাইরে ফ্লাইওভারের অ্যালাইনমেন্টে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এজন্য বারিক বিল্ডিং থেকে কাস্টম পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় ৩০-৪০ ফুট জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এর ফলে ওইসব স্থান থেকে বেশকিছু স্থাপনা আংশিক ও পূর্ণাঙ্গভাবে অপসারণ করা হবে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বন্দর অংশটি দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। এখান থেকে পণ্য খালাস নির্বিঘ্ন করতে এক্সপ্রেসওয়ের বন্দরের অংশে নকশায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমরা কাজ শুরু করেছি। এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর অংশের কাজও পুরোদমে চলছে।
বন্দরের আইএসপিএস কোড অনুযায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বারেক বিল্ডিং হতে সল্টগোলা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রয়োজনীয় উচ্চতার সেফটি ও সিকিউরিটি ব্যারিয়ার সংযোগ করা হবে। বন্দরের লরি, কনটেইনার, কাভার্ড ভ্যানগুলো বন্দরে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার সময় যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হয় সেজন্য ফ্লাইওভারের ক্লিয়ার উচ্চতা ইত্যাদি সংশোধন করে নকশায় পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া কাস্টমস ও নিমতলা জংশনের পিয়ার বাদ দিয়ে জংশনকে উন্মুক্ত রাখা হবে। বিমানবন্দর থেকে আসা গাড়ি বন্দরে নামার জন্য নিমতলা মোড়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জায়গায় একটি ডাউনওয়ার্ড র্যাম্প স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম থেকে বিমানবন্দর অভিমুখী গাড়ি ফ্লাইওভারে ওঠার জন্য সল্টগোলা মোড়ের পর আপওয়ার্ড র্যাম্প সংযোজন করা হবে।
বন্দরের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে সিইপিজেডের গাড়িগুলো যাতে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে সল্টগোলা ক্রসিংয়ের রাস্তা ব্যবহার না করে সেজন্য সিইপিজেডের সঙ্গে রিং রোডের ডাইভার্সন সড়ক নির্মাণ করা হবে।
২০১৭ সালের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৭ জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৯
ইউডি/এসি/টিসি