শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কক্ষে শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের এক দশক শীর্ষক চট্টগ্রাম বিভাগীয় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশের ১৫ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর, অন্যতম শিল্পনগরী। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ নতুন উচ্চতায় উঠেছে। দারিদ্র্য কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। খাদ্যঘাটতির বাংলাদেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ। বাংলাদেশ এখন বিশ্ব খাদ্য সংস্থার কাছে কেস স্টাডির দেশ।
‘দেশে আগে দুর্যোগ হলে বহির্বিশ্বের কাছে সাহায্য আহ্বান করা হতো। এখন আমরা অন্যদের সাহায্য দিই। বিদেশের শোরুমের পোশাকে মেড ইন বাংলাদেশ দেখলে গর্বে বুক ভরে যায়। এ পরিবর্তন, দেশের বদলে যাওয়া শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বের কারণে হয়েছে। ’
মন্ত্রী বলেন, দেশের ৯৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। এখন গ্রামে এয়ার কন্ডিশনারের শোরুম গড়ে উঠছে। মুজিব বর্ষ শেষে শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাবেন। এখন কলকাতার মানুষ বাংলাদেশে বেড়াতে আসে। টাকার মানও কাছাকাছি। বিএনপির অপরাজনীতি, পেট্রল বোমা হামলা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরুদ্ধ না করলে দেশ আরও এগিয়ে যেত।
সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য এমএ লতিফ ও চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
এমএ লতিফ বলেন, একসময় আমরা আশ্বাস শুনতাম। রাজনীতিবিদদের ওপর মানুষের আস্থাই ছিল না। কিন্তু শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দিয়েছেন এ দেশ মানবিক দেশ, অর্থনৈতিক ম্যাজিকের দেশ।
তিনি বলেন, জাপানের মিনারেল রিসোর্সেস নেই। কোরিয়া খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দেশ নয়। ভেনিজুয়েলা, নাইজেরিয়া খনিজ সম্পদে ভাসছিল। একটি কারণ, চীন, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া জনসম্পদের কারণে এগিয়ে গেছে। টানেল হয়ে যাচ্ছে-এর জন্য চট্টগ্রামের মানুষকে আন্দোলন করতে হয়নি। একটি শাহ আমানত সেতুর জন্য ১২ বছর আন্দোলন করতে হয়েছিল। ১০০ ইকোনমিক জোন করে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
এম এ লতিফ বলেন, শেখ হাসিনার প্রতিটি কথা আমি বিশ্বাস করি। পাওয়ার এনার্জি, অবকাঠামো ৫০ বছরের জন্য করে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এটি রক্ষার জন্য আমাদের সন্তানদের কারিগরি শিক্ষামুখী করতে হবে। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক, সমাজপতিদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে মা-বাবাকে।
সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য উপ কমিটির সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বলেন, যে জেগে ঘুমায় তাকে জাগানো যায় না। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যারা জেগে ঘুমাচ্ছে তারা দেখে না। শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি দরকার হলে জেলে যাবো বাঙালির ঘরে ঘরে আলো দিয়ে যাব। পদ্মা সেতু নিজের টাকায় করবো।
তিনি বলেন, ১৯৬৪ সালের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি গেলাম। ইংলিশে কথা বলতেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেছেন, তুমি চট্টগ্রামে চলে যাও। চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে আমার প্রথম চাকরি হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর চিঠি দিয়ে। সাড়ে চারশ' টাকা বেতন। বঙ্গবন্ধু সবাইকে দেশ দিয়ে গেছে, আমাকে দোয়া দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু ৬ দফা চট্টগ্রামে দিয়েছিলেন। নেত্রীও চট্টগ্রামকে ভালোবাসেন। চট্টগ্রামের সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক। আমার দুই সন্তানের বিয়ে হয়েছে চট্টগ্রামের পরিবারে।
কাজী আকরাম বলেন, বাংলাদেশের সোনালি যুগ গত ১০ বছর। ৫ লাখ কোটি টাকার বেশি জাতীয় বাজেট আমাদের। আগে বাজেট হতো ঋণনির্ভর। এখন আয়কর মেলা হয় কারণ এ দেশের মানুষ কর দেওয়া শিখেছে। সামাজিক নিরাপত্তা সূচকে ভারতের চেয়ে এগিয়ে। অমর্ত্য সেন বলেছিলেন, 'বাংলাদেশের অর্থনীতি উড়ছে। ' ২০৩০ সালে আমরা হবো ২৬তম অর্থনীতির দেশ।
‘১৯৮০ সালে ওমরা করতে যাই। তখন বলতো, কুল্লু মিসকিন। সেই আরবরা এখন বলে, তোমাদের দেশে বিনিয়োগ করা যাবে। কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে আসছে। শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন, সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বাংলাদেশের। ’
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুছ ছাত্তার।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
এআর/টিসি