শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে তিন্নি দাশের মা পল্লবী দাশের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এ সময় তিনি তিন্নি দাশের মাকে এসব প্রতিশ্রুতি দেন।
গত ৩০ অক্টোবর বাবা মৃণাল দাশের সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মেয়ে তিন্নি দাশ। পরীক্ষা শেষে শহরে ফিরতে চবি থেকে দুপুর দেড়টায় ছাড়া শাটল ট্রেনে উঠেন তারা।
শাটল ট্রেনে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে ট্রেনের ভিতরেই হিট স্ট্রোক করেন মৃণাল দাশ। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মেয়েকে পরীক্ষা দিতে নিয়ে এসে মৃত্যুর কোলো ঢলে পড়া এ বাবার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।
বাবা হারানো তিন্নির পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা এবং সমাজের বিত্তশালীদের অনুরোধ জানান তারা। তাদের অনুরোধের মধ্যেই সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের পক্ষ থেকে তিন্নির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর এ প্রতিশ্রুতি এলো।
তিন্নি দাশের মা পল্লবী দাশ বাংলানিউজকে জানান, শুক্রবার রাতে আমাদের সহমর্মিতা জানাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বাসায় আসেন। এ সময় ইকবাল হোসেন টিপুর মুঠোফোনে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন আমার সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি জানান, তিন্নির বাবাকে হারানোর পর আমাদের অসহায়ত্ব মেয়রের কাছে তুলে ধরেছি। আমাদের বড় ছেলে সানি দাশকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। মেয়র আমাদের সার্বিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমাদের ছেলে সানি দাশকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
ইকবাল হোসেন টিপু বাংলানিউজকে জানান, মেয়ে তিন্নি দাশকে পরীক্ষা দিতে নিয়ে এসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া মৃণাল দাশের পরিবারকে সহায়তা দিতে আমাদের নেতা আ জ ম নাছির উদ্দীনকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তিনি তিন্নির পরিবারের সঙ্গে নিজে কথা বলেছেন। তাদের সব ধরণের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মানবিক বিবেচনায় তিন্নির ভর্তি চান চবি শিক্ষক
ভর্তি পরীক্ষায় পাস না করলেও মানবিক বিবেচনায় বাবা হারানো তিন্নি দাশকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির কাছে সুপারিশ করবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। এ নিয়ে শুক্রবার (১ নভেম্বর) ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন তিনি।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মেয়েটি হয়তো চান্স পায়নি। তবে তার বাবার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে মানবিক বিবেচনায় তাকে চবিতে শর্তহীনভাবে ভর্তি করানোর চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব আমি উত্থাপন করেছি। যদিও সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে অনুষদের ডিন ও সকল বিভাগের চেয়ারম্যানরা এতে সম্মতি দিয়েছেন।
‘অবশ্য এটা যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক ভর্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়। তাই এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পর্ষদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন। ’ বলেন এ অধ্যাপক।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৯
জেইউ/টিসি